পল্লী বিদ্যুতের আন্দোলন নিয়ে কঠোর হয়েছে সরকার। আন্দোলন দমনে অনেককে চাকরিচ্যুত ও বদলি করা হয়েছে। কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়েছেন। বিদ্যুৎ নিয়ে বিশৃঙ্খলা করলে বরদাশত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা।
গতকাল আন্দোলনরত পবিস প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকও বাতিল করা হয়। এদিকে, চলমান আন্দোলন নিয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করার দায়ে গতকাল পবিসের ছয় কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রায় ২০ জনকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হলো।
এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, দেশে আপাতত ব্ল্যাকআউট হওয়ার মতো কোনো ঝুঁকি নেই। তবে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিআরইবির অফিস আদেশে জানানো হয়, চট্টগ্রাম পবিস (পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি) ১-এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লা আল মামুনকে রাজশাহী জোনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে, নরসিংদী পবিস ১-এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আবদুল্লাহ আল হাদীকে চট্টগ্রাম জোনে, নরসিংদী পবিস ২-এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ভুঁইয়াকে কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে, ঢাকা পবিস ১-এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার তামজিদুল ইসলামকে রংপুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে, নওগাঁ পবিস ২-এর জেনারেল ম্যানেজার শাহ মো. রাজ্জাকুর রহমানকে চট্টগ্রাম জোনে ও গাজীপুর পবিস ১-এর ওয়্যারিং পরিদর্শক শেখ রহমত উল্লাহ নাজিরকে নীলফামারী নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার নানা অভিযোগে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২০ জিএম, ডিজিএম ও এজিএমকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় বিআরইবি। এরই মধ্যে ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে ‘বাংলাদেশের জন্য টেকসই জ্বালানি’ বিষয়ক একটি সেমিনার শেষে জ্বালানি উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ব্ল্যাক আউটের কোনো ঝুঁকিতে নেই। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা যা করেছে, সেটা অন্যায়। তারা কাজে যোগ না দিলে বিকল্প জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।
ধান কাটার মতো দাবি আদায়ের মৌসুম চলছে উল্লেখ করে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির যৌক্তিক দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার যে দাবি তুলেছে, সেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। হুট করে কোনো ঘোষণা দেওয়া যায় না। সরকারকে দুর্বল মনে করে দাবি-দাওয়া তুললেই হয়ে যাবে, এটা ভাবা ঠিক নয়। এই সরকার দুর্বল নয়, অনেক সরকারের চেয়ে শক্তিশালী। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কেউ দায়িত্ব পালন না করে চলে গেলে তাদের একবারে চলে যাওয়া উচিত।