এইচএসসিতে ফেল করা একদল শিক্ষার্থীদের অটো পাস করানোর দাবির মুখে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতির জন্য শিক্ষা সচিব বরাবর আবেদন করেছেন অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। আজ সোমবার এইচএসসিতে সব বিষয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে পুনরায় ফল ঘোষণার দাবির প্রতিক্রিয়াতে এই তথ্য জানান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।
তিনি বলেন, বিশেষ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমন প্রত্যাশা ডেভলাপ করেছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদী চিন্তা করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সহসাই সিদ্ধান্ত আসছে বলেও জানান তিনি।
ফল ঘোষণার পরও বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিশ্চয়ই আলোচনা করবো। একই সঙ্গে বিষয়টি পর্যালোচনাও করবো। জাতি ও সবার জন্য ভালো হয় সেই সিদ্ধান্তই নেবো।
এ ব্যাপারে আন্তঃ বোর্ড সমন্বয়ক বলেন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান মাউশিতে সংযুক্তির আবেদন করেছেন।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় এইচএসসিতে ফেল করা একদল শিক্ষার্থীদের অটো পাস করানোর দাবির মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দেন অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষার্থীদের ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানান।
এসময় তপন কুমার সরকার বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার পদত্যাগ চেয়েছে। আমি পদত্যাগ করলে যদি তারা আন্দোলন স্থগিত করে তাহলে আমি পদত্যাগই করবো।
ওই দিন বেলা ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনে জড়ো হয় এইচএসসিতে ফেল করা শিক্ষার্থীরা। পরে তারা বোর্ডের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। দুপুর পৌনে দুইটার দিকে তারা তালা ভেঙে বোর্ডের ভেতরে প্রবেশ করে চেয়ারম্যানের কক্ষে চলে যান। সেখানে ভাঙচুরও চালানোর অভিযোগ পাওয়া যায়।
সেসময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন ছাত্রীসহ ১১ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হামলায় বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তারা একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানান।
১৫ অক্টোবর এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। স্থগিত হওয়া বিষয়গুলোর পরীক্ষা আন্দোলনের মুখে বাতিলের কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হয়েছে ভিন্ন পদ্ধতিতে। বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর মূল্যায়ন হয়েছে পরীক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং)। অর্থাৎ এসএসসিতে যে শিক্ষার্থী যত নম্বর পেয়েছিলেন, সেটা এইচএসসিতে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আর এইচএসসিতে যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়েছিল, সেগুলোর উত্তরপত্রের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হয়েছে। এ দুই মূল্যায়ন মিলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইতিমধ্যে যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। এ জন্য এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সব বিষয়ের ওপর ‘ম্যাপিং’ করে ফলাফল নতুন করে প্রকাশ করতে হবে।
তাদের দাবি, ত্রুটিপূর্ণ ও বৈষম্যমূলক ফল বাতিলসহ দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে সমভাবে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে পুনরায় ফল প্রকাশ করতে হবে।
এদিকে এদিন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও যশোর শিক্ষা বোর্ডে ফল বাতিল করে সবাইকে পাস করিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি করে এইচএসসিতে ফেল করা শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।