নেপালের এভারেস্ট অঞ্চলে উড্ডয়নের পরপরই মঙ্গলবার বিধ্বস্ত হয়ে একটি পর্যটক হেলিকপ্টারে থাকা ছয়জনই নিহত হয়েছে। দেশটির বিমান কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
হেলিকপ্টারটি স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪ মিনিটে উড্ডয়নের আট মিনিটের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বলে নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএএন) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। মানাং এয়ারের ফ্লাইটটিতে পাঁচ মেক্সিকান পর্যটক ও একজন নেপালি পাইলট ছিল।
তারা বিশ্বের সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণের প্রবেশদ্বার লুকলার কাছে থেকে দেশটির রাজধানী কাঠমাণ্ডুর দিকে যাচ্ছিল।
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মহাব্যবস্থাপক প্রতাপ বাবু তিওয়ারি এএফপিকে বলেছেন, স্থানীয়রা এবং পুলিশ জানিয়েছে, ছয়টি মরদেহই উদ্ধার করা হয়েছে।
তিওয়ারি জানান, অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজের জন্য দুটি হেলিকপ্টার ও উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। তবে আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারগুলো ওই এলাকার কাছাকাছি অবতরণ করতে পারেনি।
তাই উদ্ধারকারীরা হেঁটে মরদেহ উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে গেছেন। মরদেহগুলো প্রথমে যানবাহনে করে হেলিকপ্টার পর্যন্ত নেওয়া হবে। তারপর সেগুলো কাঠমাণ্ডূতে স্থানান্তর করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা লাকপা শেরপা, যিনি অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছিলেন, তিনি বলেছেন, দৃশ্যটি ‘খুবই ভীতিকর।
মনে হচ্ছে হেলিকপ্টারটি প্রথমে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে পরে মাটিতে আছড়ে পড়ে। এতে মাটিতে একটি ছোট গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।’
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বলে তার কার্যালয় টুইটারে জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, নেপাল তার দুর্বল বিমান নিরাপত্তার জন্য কুখ্যাত এবং মঙ্গলবারের ঘটনাটি দেশটিতে বিমান দুর্ঘটনার সর্বশেষ ঘটনা। মে মাসে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য মালামাল নামানোর সময় দেশটির পূর্বাঞ্চলে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হলে একজন নিহত ও চারজন আহত হয়।
এর আগে জানুয়ারিতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে একটি বিমান দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ৭২ জনের সবাই নিহত হয়।
২০১৮ সালে কাঠমাণ্ডুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৫১ জন নিহত ও ২০ জন গুরুতর আহত হয়।
১৯৯২ সালে নেপালের সবচেয়ে মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনায় কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দরের কাছে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে বিমানে থাকা থাকা ১৬৭ জনের সবাই মারা যায়। মাত্র দুই মাস আগেও একই বিমানবন্দরের কাছে থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১১৩ জন নিহত হয়।
উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিরাপত্তা উদ্বেগের জন্য তাদের আকাশসীমা থেকে সমস্ত নেপালি বিমানকে নিষিদ্ধ করেছে।