

নেপালে ৭২ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে পোখারায় দুর্ঘটনাস্থল থেকে ওই উড়োজাহাজের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) ও ডেটা রেকর্ডার উদ্ধারের তথ্য জানায় রয়টার্স।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৬৮ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। আর কাউকে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের কর্মকর্তা টেকনাথ সিতৌলা বলেন, দুটি রেকর্ডারই ভালো অবস্থায় ছিল এবং উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে পাইলট ও ক্রুদের মধ্যে কথোপকথন শোনার জন্য এগুলো তদন্তকারীদের কাছে পাঠানো হবে।
রোববার সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৬৮ যাত্রী ও চার ক্রু নিয়ে পোখারার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এটিআর ৭২ উড়োজাহাজটি এর ২০ মিনিটের মধ্যে পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পুরনো বিমানবন্দরের মাঝামাঝি এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাত্রীদের মধ্যে ৫৩ জন নেপালের, ভারতের পাঁচজন, চারজন রাশিয়া এবং দুজন কোরিয়ার। এ ছাড়া আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের একজন করে নাগরিক ছিলেন ওই উড়োজাহাজে।
কর্তৃপক্ষের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো যে তথ্য দিয়েছে তাতে কোনো বাংলাদেশির ওই উড়োজাহাজে থাকার তথ্য মেলেনি।
ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো পোখারার গান্ডকি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাসকি জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, অধিকাংশ মরদেহ এতটাই পুড়ে গেছে যে, এগুলো চেনা যাচ্ছে না।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কৃষ্ণ প্রসাদ ভান্ডারি বলেন, ‘উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার জায়গা থেকে আমরা কাউকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারিনি।’
স্থানীয় সাংবাদমাধ্যগুলো বলছে, কী কারণে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হলো তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বাকি চারজনের খোঁজে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মীরা।
বিমান দুর্ঘটনা নেপালের জন্য অস্বাভাবিক নয়। প্রায়ই দূরবর্তী রানওয়ে এবং হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এ দেশে দুর্ঘটনা ও এতে প্রাণহানির খবর আসে।
নেপালে গত বছরের মে মাসে ২২ জন নিহত হয়েছিলেন একটি বিমান দুর্ঘটনায়। গত ৩০ বছরে এ দেশে প্রায় ৩০টির মতো বিমান দুর্ঘটনায় পড়েছে।
২০১৮ সালের ১২ মার্চ দেশটির কাঠমান্ডু ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান। সেই দুর্ঘটনায় ৫১ জন যাত্রী এবং ক্রু নিহত হন।