নভেম্বর ২৪, ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৪৪টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে তোলা হচ্ছে। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে সরকারের পতন হওয়ায় এসব গাড়ি এমপিরা খালাস করতে পারেননি। আওয়ামী লীগ সরকার টিকে গেলে, প্রায় ৪০০ কোটি টাকার এই গাড়িগুলো বিনা শুল্কে ছাড়িয়ে নিতেন তারা।

সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার আগে সাতজন এমপি, যাদের মধ্যে সাকিব আল হাসান, ফেরদৌস আহমেদ ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন ছিলেন, সাতটি গাড়ি খালাস করে নিয়েছেন। আরও চারজন এমপি গাড়ি ছাড়াতে নথি জমা দিলেও, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সেগুলো আটকে দেয়। এখন আর বিনা শুল্কে গাড়ি ছাড়ানোর সুযোগ নেই।

কাস্টমস সূত্র জানায়, শর্ত শিথিল করে এসব গাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিটি গাড়ির বাজারমূল্য ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা, যার ইঞ্জিন ক্ষমতা ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ সিসি পর্যন্ত। এই ধরনের গাড়ির ওপর ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপিত হয়, তবে এমপিরা পেতেন শুল্কমুক্ত সুবিধা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানিকারী এমপিদের মধ্যে ছিলেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মাগুরা-১ এর সাবেক এমপি সাকিব আল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ এর সাবেক এমপি ফয়জুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-৩ এর সাবেক এমপি গোলাম ফারুক পিংকু, নাটোর-১ এর সাবেক এমপি আবুল কালাম, কিশোরগঞ্জ-৫ এর সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান মঞ্জু, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরি, চিত্রনায়ক ও সাবেক এমপি ফেরদৌস এবং ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। এছাড়াও বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরসহ অন্তত ৫১ জন এমপি ছিলেন।

কাস্টমসের তথ্যমতে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় বেশিরভাগ গাড়ি জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করা হয়েছে। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ ও টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগনের মতো মডেল। এমপিরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন। তবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এমপিদের গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হলেও, শেষ পর্যন্ত তা গৃহীত হয়নি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...