নভেম্বর ১৫, ২০২৪

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনের আগে দুটি কাজ নিয়ে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে একটি কাজ হলো, নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া। আর আরেকটি কাজ হলো, বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলের আন্দোলনের নামে চোরাগোপ্তা হামলা মোকাবিলা এবং নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখা।

আজ শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে সহযোগী সংগঠনগুলোর যৌথ সভায় এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। আজকে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আলাপ-আলোচনার ভূমিকা আমাদের কার্যক্রমকে জোরদার করতে সহায়ক হবে। আমাদের হাতে সময় একেবারেই কম। নির্বাচন জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হলে আমাদের হাতে সময় একেবারেই কম।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমাদের দুটি কাজ। এর মধ্যে একটা হলো নির্বাচনের প্রস্তুতি। আরেকটা কাজ হলো বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলের আন্দোলনের নামে চোরাগোপ্তা হামলা মোকাবিলা এবং নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখা।’

আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘২৮ তারিখের পরে ঢাকাসহ সারা দেশে সরকারি দল সাধারণত স্ট্যান্ড শো করতে পারে না। সাংগঠনিক কার্যক্রম কিছুটা কম হয়। এবার কিন্তু দেখতে পাচ্ছি ভিন্ন চিত্র। সারা দেশের নেতাকর্মীরা মাঠে আছে। সবাই বিবেকের তাড়নায় একটি আদর্শের অনুসারী হয়ে এক ভিন্ন প্রতিকূল স্রোতের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছে, স্রোতের বিপরীতে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশে বিভিন্নভাবে সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। এটা আমরা লক্ষ্য করছি। ২৮ তারিখে তাদের (বিএনপি) আন্দোলন ব্যর্থ হয়। স্বাভাবিক আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ার পর তারা অস্বাভাবিক পথে যাচ্ছে। তাদের পুরনো চোরাগোপ্তা হামলা, গাড়ি পোড়ানো, আগুন সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি করছে। তারা সরকার, তথা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সরাসরি পারছে না, তাই চোরাগোপ্তা হামলায়।’

সামনে কঠিন পথ অতিক্রম করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক পাহারায় থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। যেসব জায়গায় তারা হামলা চালায়, সেসব জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি জোরদার করতে হবে। প্রস্তুতি নিয়ে জায়গা চিহ্নিত করে অবস্থান নিয়ে সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারি দলের নেতাকর্মীদের অনাগ্রহ, আলস্য আমরা দেখিনি। আমরা লক্ষ করছি, আদর্শের প্রশ্নে নেত্রীর প্রতি আনুগ্যত, নেত্রীর নির্দেশে আদেশ পালনে প্রত্যেকে সক্রিয়। সামনে আরও কঠিন পথ আমাদের পাড়ি দিতে হবে। সেভাবে আপনাদের প্রস্তুত করুন। এটা শুধু নির্বাচনের জন্য না, এটা আদর্শের লড়াই। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে পক্ষের শক্তির লড়াই, আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। উন্নয়ন আর অর্জনের জন্য শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। এই যুদ্ধ জয়ের প্রতিজ্ঞা নিয়েই নেমেছেন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা। এই সংকট আস্তে আস্তে কেটে যাবে।’

পোশাক শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে বিএনপির উসকানি আছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইন্ধন তো আছেই। এখানে পরিষ্কারভাবে বিএনপি এবং তার দোসরদের কালো হাত বিস্তৃত হয়ে আছে। তারাই উসকানি দিচ্ছে, তারাই গুজব সৃষ্টি করছে। উসকানি আর গুজব সৃষ্টি করে তারা নিরীহ শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করছে। কোথায় ছিল শ্রমিকদের বেতন ৮০০ টাকা। আর সেই বেতন এখন ১২ হাজার ৫০০ টাকা, যেটা ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন দেশের অবস্থাও বুঝতে হবে। নেত্রী (শেখ হাসিনা) গতকাল (বৃহস্পতিবার) পরিষ্কার করে সেটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেখানে বিজিএমইএর দু-একজন নেতাও ছিলেন। তারা শুনেছেন। এ ব্যাপারে বেশির ভাগ সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে। তবে কোনাবাড়ী ও আশুলিয়া, এই দুটি জায়গায় কিছু সমস্যা আছে। আমরা মনে করি, আমাদের শ্রমিকরা বর্তমান বাস্তবতার বিষয়গুলো উপলব্ধি করে সমাধানে এগিয়ে আসবেন।’

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত মনিটরিং (নজরদারি) করছেন। এটা নিয়ে খুব একটা ষড়যন্ত্র করে, ওই ২৮ তারিখের মতো কিছু একটা করবে, সে আশা গুড়েবালি। আমরা আশা করি, শ্রমিকরা নিজেরা নিজেদের ক্ষতি করবে না। শ্রমিকদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সংস্থান করে যে চাকরি, সেই চাকরি নিয়ে তারা যদি বিভ্রান্ত হয়, তাহলে ক্ষতিটা বাংলাদেশের হবে এবং শ্রমিকদের নিজেদেরও হবে। গুজবকারীদের কিছুই হবে না। গুজবকারীরা ভেজাল করবে, গণ্ডগোল পাকাবে এবং নিজেদের পকেট ভারী করবে। তাদের খারাপ মিশন আছে। কাজেই তাদের কথায় কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, দপ্তর উপসম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...