চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ৩২০টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। যা গত মাসের তুলনায় ৩২টি বেশী। এ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ২৯টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ৭টি, ধর্ষণ ও হত্যার ২টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫ জন প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী।
গত মাসে ধর্ষণের শিকার ২৯ জনের মধ্যে ৮ জন শিশু, ১০ জন কিশোরী রয়েছে। অপরদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩ জন কিশোরী ও ৪ জন নারী এবং ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন ১ জন শিশু ও ১ জন নারী। ধর্ষণের চেষ্টা ১৪টি, যৌন হয়রানি ১৮টি, শারীরিক নির্যাতনের ৯৯টি ঘটনা ঘটেছে।
মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রেরিত ‘মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং প্রতিবেদন নভেম্বর, ২০২৪’ এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল এ প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাঠায় এমএসএফ। বিভিন্ন পত্রিকার তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতি মাসে এমএসএফ এর পক্ষ থেকে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নভেম্বর মাসে দেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা যেমন– ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন হয়রানি কিছুটা কমলেও আত্মহত্যা, হত্যা, পরিবারিক সহিংসতা ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা গত মাসের তুলনায় বেড়েছে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, তা দৃশ্যমান হচ্ছে না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নভেম্বর মাসে বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের উপর শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা বেশী পরিলক্ষিত হয়েছে, যা কখনোই কাম্য নয়। গত মাসে ২ জন শিশু, ১৬ জন কিশোরী ও ৩৫ জন নারীসহ মোট ৫৩ জন আত্মহত্যা করেছেন। অ্যাসিড নিক্ষেপে আক্রান্ত হয়েছেন ১ শিশু ও ১ জন নারী।
অক্টোবরে ২০০ নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার: মহিলা পরিষদঅক্টোবরে ২০০ নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার: মহিলা পরিষদ
এছাড়া নভেম্বর মাসে ২ জন শিশু, ৩ জন কিশোরী ও ৬ জন নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ মোট ৮২ জন শিশু, কিশোরী ও নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে ২২ জন শিশু ও কিশোরী রয়েছেন। এছাড়া অপহরণের শিকার হয়েছেন ২ জন শিশু, ১ জন কিশোরী ও ১ জন নারী অপরদিকে ৩ জন শিশু, ৪ জন কিশোরী ও ১ জন নারী নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রতিশোধ, পারিবারিক বিরোধ, যৌতুক, প্রেমঘটিত, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া ও অভিমান ইত্যাদি কারণে এ হত্যাকাণ্ড ও আত্মহত্যাগুলো সংঘটিত হয়েছে। গত মাসে ২টি শিশু ধর্ষণের ঘটনা সমাজপতিরা আপস করেছেন, যা প্রচলিত আইনকে অবজ্ঞা করে বেআইনিভাবে সালিশের মাধ্যমে মীমাংসার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।