পুঁজিবাজারে নতুন আরও ২৩ কোম্পানির শেয়ারের উপর থেকে ফ্লোরপ্রাইস (শেয়ারের দামের নিম্ন সীমা) তুলে নেওয়া হলেও তা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের কিছু নেই বলে মনে করেন শীর্ষ ব্রোকারহাউজগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন সিইও ফোরাম।
সিইও ফোরাম মনে করে, বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগে সক্রিয় আছে। তারা বাজারকে ইতিবাচক রাখার চেষ্টা করবে। অবশিষ্ট ১২ কোম্পানির শেয়ারের উপর থেকেও দ্রুত ফ্লোরপ্রাইস তুলে নেওয়া উচিত। তাতে সব বাজারে সমানক্ষেত্র তৈরি হবে। তাই বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
মঙ্গলবার (২৩) সকালে সিইও ফোরামের প্রেসিডেন্ট ও ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছায়েদুর রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাকের আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিইও ফোরামের প্রেসিডেন্ট ও ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছায়েদুর রহমান দ্য বিজ২৪কে বলেন, বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের স্বার্থে সিইও ফোরাম কাজ করে যাচ্ছে। আজকেও পুঁজিবাজার ইতিবাচক প্রবণতায় রয়েছে। পুঁজিবাজারকে সার্বোক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হবেন না। মঙ্গলবার সকালে বিনিয়োগকারীদের সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাদেরকে জানিয়েছি, বাজারকে সার্বোক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। বাজারের প্রয়োজনে যে ধরনের ইনেশিয়েটিভ নেওয়ার দরকার সেটা নেওয়া হবে। সিইও ফোরাম পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। বিনিয়োগকারীদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই।
এদিকে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক দ্য বিজ২৪কে বলেন, পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে অব্যাহত ফান্ড সাপোর্ট বা বাই মুডে থাকবেন মার্চেন্ট ব্যাংকসহ ব্রোকার হাউসগুলো। রাজনৈতিক যে জটিলতাগুলো ছিল তা কেটে গেছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে লেনদেনে বাধা সৃষ্টি হয়েছিল তা এখন আর নেই। সব মিলিয়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা সকলেই প্রত্যাশা করছেন পুঁজিবাজারের অনেক এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা একজন যোগ্য, মেধাবী ব্যক্তিকে সিকিউরিটিস এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান পেয়েছি। তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বিনিয়োগকারীদের বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা করেছে। তিনি যে সিদ্ধান্ত এতো দিন নিয়ে আসছেন বা আগামীতে নিবেন তা সাধারণ বিনিয়োগকারীর পক্ষেই যাবে। সুতরাং আমরা তার পরিকল্পনায় বাধা সৃষ্টি করবো না। তবে তার নিকট অনুরোধ থাকবে, অধিকাংশ কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর যেহেতু তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই বাকি কোম্পারিগুলোর ওপর থেকে দ্রুত ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হোক। বিনিয়োগকারীদের লেনদেন করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হোক।
তিনি আরও বলেন, নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী পুঁজিবাজার বান্ধব। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন পুঁজিবাজার উন্নয়নে সর্বাত্মক সহায়তা করবেন। তাই আমরা সকল বিনিয়োগকারীদের অনুরোধ করবো প্যানিক সেল না দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে থাকার। বর্তমান কমিশন প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন, সুতরাং আমরা বিস্বাস করি যারাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কষ্টাজিত অর্থ লুটপাট করতে চাইবে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ফ্লোর প্রাইস আরোপের প্রায় দেড় বছর পর গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এক আদেশে তা তুলে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে রোববার (২১ জানুয়ারি) থেকে ৩৫টি ছাড়া বাকি সব কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটগুলো ফ্লোর প্রাইস ছাড়াই লেনদেন হয়। এর দুই কার্যদিবসের মাথায় ওই ৩৫টির মধ্য থেকে ১২টি বাদে ২৩টি কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন।