সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ডিএমপির বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে, এখনও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কয়েকশ শিক্ষার্থী নতুন বাজার সিগন্যালের সামনে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন। এ সময় নতুন বাজার এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী সব যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শত শত যানবাহন সেখানে আটকা পড়েছে।

রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন।

জানা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টা থেকে নতুন বাজারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা অবরোধ শুরু করেন। এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে সংঘর্ষ বাধে।

উল্লেখ্য, গত রোববার চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তায় নেমে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

একই ইস্যুতে গতকাল সোমবার উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাবিসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। দুপুরের দিকে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে এসে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার চেয়ে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার’ স্লোগান দেন। তাদের এমন স্লোগান ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আলাদা অনুষ্ঠানে তাদের স্লোগানের ভাষার তীব্র সমালোচনা করেন।

এরপর ক্যাম্পাসে সক্রিয় হয় ছাত্রলীগ। দুপুর ২টার দিকে তারা বিজয় ৭১ হলসহ বিভিন্ন হলে আন্দোলনকারীদের বাধা দেন। এ খবরে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান আন্দোলনকারীরা। উভয়পক্ষ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। বেশ কয়েকজনকে অস্ত্র হাতেও দেখা যায়। এরপর থেকে গোটা ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আহত হন কয়েকশ শিক্ষার্থী। তাদের ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুরুতরদের হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়।

অন্যদিকে, আন্দোলনকারীদের হটাতে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে ঢাবির দোয়েল চত্বর এলাকা থেকে সাঁজোয়া যান নিয়ে অভিযান শুরু করে পুলিশ। রাত পৌনে ১০টার দিকে ক্যাম্পাস ছাড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

রাতেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলার অভিযোগ ওঠে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।

মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *