আগস্ট ৩১, ২০২৪

নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় বিদেশী ফল ড্রাগন চাষ করে ব্যপক সফলতা পেয়েছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মাহবুব জামান। ড্রাগনের চারা রোপণের দেড় বছরে দ্বিতীয় মওসুমে মাত্র তিন বিঘা জমি থেকে ১২ লক্ষ টাকার ড্রাগন বিক্রি করার প্রত্যাশা করছেন তিনি। তাঁর এ সফলতায় অনেকেই ড্রাগন চাষের উদ্যোগ নেয়ার প্রত্যাশায় এগিয়ে আসছেন।

উচ্চ শিক্ষিত কৃষি উদ্যোক্তা মাহবুব জামান নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার শিবরামপুর গ্রামে তাঁর প্রায় ৭ বিঘা জমিতে মিশ্র ফল বাগানে কেবলমাত্র ড্রাগন চাষ করেছেন তিনবিঘা জমিতে। গত ২০২৩ সালে ফ্রেবৃুয়ারী মাসে এ তিন বিঘা জমিতে সাড়ে ৫ হাজার ড্রাগন চারা রোপণ করেন। চারা রোপণের এক বছর পরেই প্রথম বার তেমন ফল না আসলেও দ্বিতীবারে ব্যাপক ফল ধরেছে গাছে গাছে। ইতিমধ্যেই তাঁর এ বাগানের ড্রাগন ফল বাজারজাত করতে শুরু করেছেন। প্রতিদিন দু’শ থেকে তিনশ কেজি ড্রাগন উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে। সেই হিসেবে আগামী নভেম্বর পর্যন্ত এ মওসুমে তাঁর এ বাগান থেকে প্রায় ৬ হাজার কেজি ড্রাগন ফল উত্তোলনের প্রত্যাশা করছেন তিনি। তাঁর এ বাগানের ড্রাগন ফল টকটকে লাল বর্নের এবং খুবই সুস্বাদু। বর্তমান পাইকারী বাজার মূল্য প্রতি কেজি ২০০ টাকা হিসেবে ১২ লক্ষ টাকার ড্রাগন বিক্রি করার প্রত্যাশা। এ ড্রাগন বাগান সৃজন করতে সব মিলিয়ে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। আর তেমন কোন খরচ নাই। শুধু পরিচর্যা। আগামী বছরগুলো কেবলই আয়রে মুখ দেখবেন এ উদ্যোক্তা।

মাহবুব জামানের এ ড্রাগন বাগানে ৬ জন শ্রমিকের কর্ম সংস্থান হয়েছে। তারা ড্রাগন বাগানের আগাছা পরিস্কার করা, অবাঞ্চিত ফুল ছেঁটে ফেলা এবং সামান্য প্রয়োজনীয় সেচ ইত্যাদি কাজ করে থাকেন। এ কাজের বিনিময়ে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে চলে তাদের সংসার।

মাহবুব জামানের ড্রাগন চাষের সফলতা এবং বাগানের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই আসছেন। তাদের অনেকেই তাঁদের নিজস্ব জমিতে ড্রাগন চাষের উদ্যোগ নিবেন বলে জানান। বাগান দেখতে আসা স্থানীয় সাংবাদিক কিউ এম সাঈদ টিটো বলেছেন মাহবুব জামানের ড্রাগন বাগান সত্যিই অনুকরণীয়। খুবই লাভজনক। তাঁর এ সাফল্য অনেককেই অনুপ্রাণিত করবে।

মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন ড্রাগন ফল অনেক পুষ্টিগুন সম্পন্ন বিদেশী ফল। ড্রাগন চাষ এখন বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ফল চাষে পানি এবং রাসায়নিক সারের তেমন প্রয়োজন হয়না । ফলে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এটা খুবই লাভজনক। ড্রাগন চাষে কেউ এগিয়ে এলে সর্বাত্মক পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করবে কৃষি বিভাগ।

মাহবুব জামান ড্রাগন চাষের পাশাপাশি একই দাগের আরও চার বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন দেশীসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের পেয়ারা বাগান। এ পেয়ারা গাছেও ইতিমধ্যে পেযারা ধরতে শুরু করেছে। পেয়ারা থেকেও তিনি আয়ের প্রত্যাশা করছেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *