নভেম্বর ১৩, ২০২৪

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং টালমাটাল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির মুনাফায় ব্যাপক উত্থান ঘটেছে। চলতি হিসাববছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৩) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে প্রায় ২৩ গুণ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা বৃদ্ধিসহ আর্থিক প্রায় সব সূচকেই ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

ওয়ালটন হাই-টেকের চলতি হিসাববছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। গত সোমবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৩৭তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ হিসাববছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যেখানে আগের হিসাববছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এদিকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানির মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ৬০ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা।

বিক্রির বিপরীতে কাঁচামাল ও ফ্রেইট কস্ট উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পাওয়ায় কোম্পানিটি মোট মুনাফার শতকরা হার আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক সূচকেও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে ওয়ালটন হাই-টেকের। চলতি হিসাববছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির প্রশাসনিক ও বিক্রিসংক্রান্ত ব্যয় সার্বিকভাবে হ্রাস পাওয়ায় অপারেটিং প্রফিট মার্জিন উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে। তাছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পাওয়ায় কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফার পরিমাণ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ও শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস)।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ২৪ পয়সা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ৪৭ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত দাঁড়িয়েছে ২৪৪ টাকা ২৬ পয়সা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৩৪৫ টাকা ৭৫ পয়সা। প্রথম ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ১৬ পয়সা।

চলতি হিসাববছরের অর্ধবার্ষিক সময় শেষে কোম্পানির আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ ও শতকরা হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। প্রথম ছয় মাসে বিক্রির বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের শতকরা হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।

এছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় গত বছরের প্রথম অর্ধবার্ষিকে কোম্পানিটি ৩৩৬ দশমিক ১ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। সেই ক্ষতি চলতি বছরের আলোচ্য সময়ে প্রায় ৮৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে মাত্র ৪৩ দশমিক ৭৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...