কোনো প্রার্থীই প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। এ কারণে সংবিধান অনুযায়ী দ্বিতীয় দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ৫ জুলাই দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর-রয়টার্স
শুক্রবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী- ২ কোটি ৫০ লাখের বেশি ভোট গণনায় দেখা গেছে, সংস্কারপন্থী প্রার্থী আইনপ্রণেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন এক কোটির বেশি ভোট। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা কট্টরপন্থী প্রার্থী সাইদ জালিলি পেয়েছেন ৯৪ লাখের বেশি ভোট।
মোট ভোটের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ ভোট কোনো প্রার্থীই না পাওয়ায় নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াল। প্রথম দফার নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দুই প্রার্থীর মধ্যে এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। নিয়ম অনুযায়ী- প্রথম দফার ফল ঘোষণার পর প্রথম যে শুক্রবার আসবে সেদিনই দ্বিতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ ৫ জুলাই মাসুদ পেজেশকিয়ান ও সাইদ জালিলির মধ্যে ভোটাভুটি হবে।
আগামী বছরের জুনে ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চার বছরের মেয়াদ শেষে ভোট অনুষ্ঠিত হতো। ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হওয়ায় প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য হয়ে পড়ায় আগাম নির্বাচন হয়।
নির্বাচনে ছয়জনকে প্রার্থী হওয়ার অনুমতি দেয় ইরান কর্তৃপক্ষ। পরে দুজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীরা হলেন- মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ, মাসুদ পেজেশকিয়ান, সাইদ জালিলি ও মোস্তফা পুরমোহাম্মদি।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের প্রেসিডেন্টের ভূমিকা বড় করে দেখা হলেও দেশের প্রকৃত ক্ষমতা থাকে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার হাতে। পররাষ্ট্র বা পারমাণবিক নীতি ও সরকারের বিভিন্ন শাখার নিয়ন্ত্রণ, সামরিক, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন আর্থিক সম্পদের বিষয়ে তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ কেউ এই নির্বাচনে জয় পাবেন। অর্থাৎ এ নির্বাচনের ফল খামেনির উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করবে।
খামেনির বর্তমান বয়স ৮৫ বছর। ধারণা করা হচ্ছে, যিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট হবেন, তিনি পরবর্তী সময়ে খামেনির উত্তরসূরি নির্বাচনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকবেন।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী- এবারের ভোটে ৪০ শতাংশের মতো ভোটার উপস্থিতি ছিল। কোনো প্রার্থী যদি ন্যূনতম ৫০ শতাংশ ভোট না পান তাহলে দ্বিতীয় দফায় গড়াবে নির্বাচন। প্রথম দফার নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে সেক্ষেত্রে। প্রথম দফার ফল ঘোষণার পর প্রথম যে শুক্রবারটি আসবে, সেদিনই হবে দ্বিতীয় দফার ভোট। দেশটির একটি বার্তা সংস্থা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ানোর আভাস দিয়েছিল আগেই। সেই আভাসই সত্যি হলো।