টানা দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের অবিরাম বর্বর হামলা প্রত্যক্ষ করেছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড। বর্তমানে সেখানে চারদিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি চললেও ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়া মাত্রই তারা আবারও গাজায় হামলা চালানো শুরু করবে।
এই পরিস্থিতিতে গাজায় দুর্ভিক্ষের বিষয়ে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন। এমনকি গাজা উপত্যকা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
তিনি এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করলেন যখন গাজায় চারদিনের যুদ্ধবিরতির অবসান ঘনিয়ে আসছে। সোমবার (২৭ নভেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএস-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন গাজায় দুর্ভিক্ষের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, গাজা ‘দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে এবং অবরুদ্ধ অঞ্চলে আরও সাহায্যের প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়াত রিপাবলিকান সিনেটর এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জন ম্যাককেইনের বিধবা সিন্ডি ম্যাককেইন আরও বলেন, এই অঞ্চলে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।
ম্যাককেইন সিবিএস ফেস দ্য নেশন মডারেটর ম্যাগারেট ব্রেনানকে বলেন, ‘প্রথমত… এখানে মূল কথা হলো, আমাদের আরও সাহায্য পেতে হবে… এতোদিন ধরে সেটিই বলা হয়েছে। আমরা দেখছি… সম্ভবত এই অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি এমন কিছু যা … আরও ছড়িয়ে পড়বে। এর সাথে নানা রোগ-বালাইও ছড়িয়ে পড়বে এবং … অন্য সবকিছুই যা আপনি কল্পনা করতে পারেন।’
যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করে সিন্ডি ম্যাককেইন বলেন, শুধু চার দিনের জন্য নয়, প্রয়োজনীয় সহায়তার বিতরণ আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, দেড় মাসেরও বেশি সময় যুদ্ধ চলার পর গত শুক্রবার চারদিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছায় হামাস ও ইসরায়েল। এ চুক্তি অনুযায়ী, হামাস ৫০ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে। অপরদিকে ইসরায়েল তাদের কারাগার থেকে ১৫০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। সোমবার এই চুক্তির শেষ দিন।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি বর্বর সেই হামলায় নিহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮৫৪ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই ৬ হাজারের বেশি।
এছাড়া হামলায় নিহতদের মধ্যে চার হাজারেরও বেশি নারী রয়েছেন। ইসরায়েল হুমকি দিয়ে আসছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হলেই তারা আবারও গাজায় হামলা চালানো শুরু করবে। তবে কাতারসহ অন্যান্য দেশগুলো বলছে, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হবে।