সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

নিজ কার্যালয়ে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার রাজশাহীর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের স্থগিতাদেশ আরও তিন মাস বাড়িয়েছেন আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে শুনানির শুরুতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও সাঈদ আহমেদ রাজা মহিবুল ইসলামের জামিন প্রার্থনা করেন। এসময় তাদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা আপনারা জিরো টলারেন্সের কথা বলি। আবার দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি কারাগারে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জামিন আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে আসেন। ৩ মাসের মাথায় কোনো দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে উচ্চ আদালত জামিন দিলে সেটা সমাজ ভালোভাবে নেয় না। মানুষ ভালোভাবে নেয় না।

এরপর প্রধান বিচারপতি আবারও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। শুনানি শেষে আদালত ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার রাজশাহীর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আরও তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। একই সঙ্গে মহিবুল ইসলামের জামিন সংক্রান্ত রুল শুনানি করতে বলেন।

এর আগে গত ১৪ আগস্ট নিজ কার্যালয়ে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার রাজশাহীর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের আবেদনের শুনানি দুই মাস স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখেন আপিল বিভাগ।

তারও আগে গত ১৮ এপ্রিল রাজশাহী মুখ্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে (সিএমএম) তাকে হাজির করা হয়। ওইদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন জানান। তবে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আল আসাদ আশিকুজ্জামান এ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং মহিবুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল দুপুরে রাজশাহী কর ভবনে অভিযান চালিয়ে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ রাজশাহী কর অঞ্চলের (সার্কেল-১৩) উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি আভিযানিক দল। এ ঘটনায় দুদক রাজশাহী কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৬১ ধারাসহ দুর্নীতি বিরোধী আইনে মহিবুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

রাজশাহীর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে এরইমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

রাজশাহী নগরীর মাদারল্যান্ড ইনফার্টিলিটি সেন্টার ও হাসপাতালের মালিক ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার পাঁচ বছরের ব্যাংক লেনদেনের বিষয়ে কর কর্মকর্তা মুহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া আপত্তি তোলেন। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে গেলে তিনি ডা. ফাতেমার কাছে ৬০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে তা ৫০ লাখ টাকায় রফা হয়।

বিষয়টি জানিয়ে ফাতেমা সিদ্দিকা গত ২৯ মার্চ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগ নিয়ে দুদকের রাজশাহী জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয় যৌথভাবে কাজ করছিল। তারা উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার ওপর নজরদারি করছিল।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *