দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল অনেকটা আকস্মিকভাবে দেশে সামরিক শাসন জারি করেন। গতকাল মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণদালে তিনি সামরিক শাসন জারি করেন। দেশটির পার্লামেন্টে বিরোধী লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সংখ্যা গরিষ্ঠতার কারণে প্রেসিডেন্ট সংসদে কোনো আইন পাস করতে পারছিলেন না। কার্যত তিনি ক্ষমতাহীন হয়ে পড়েন। স্কাই নিউজ এই খবর জানিয়েছে।
এদিকে সামরিক শাসন জারির প্রতিবাদে সে দেশের বিরোধীদলসহ অন্যান্যদলগুলো পার্লামেন্ট ভবনের সামনে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পরে স্থানীয় রাত সাড়ে ৪টায় মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক শাসন বাতিল করা হয়। এরআগে গভীর রাতে পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে সামরিক শাসন রহিত করা হয়। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের সামরিক শাসন মোট ৬ ঘন্টা স্থায়ী হয়।
সামরিক শাসন জারির ঘোষণার পর পরই বিরোধীদলসহ সাধারণ মানুষ পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। এই সময় তারা উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলতে থাকেন-‘সামরিক আইন নয়,-আমরা সামরিক আইন মানিনা, মানবো না।’
বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে পার্লামেন্টের ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়।
সামরিক আইন জারির পর প্রেসিডেন্ট বলেছেন,উত্তর কোরীয় পন্থী কমিউনিস্টদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে তিনি সামরিক শাসন জারি করেছেন।
রাষ্ট্রবিরোধী এইসব অপশক্তি নিমূলের জন্য সামরিক আইন জারি জরুরি হয়ে পড়ে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ঘোষিত সামরিক শাসনকে অকার্যকর করতে সরকার ও বিরোধীদল উভয়ই পার্লামেন্টে ভোটাভূটির আয়োজন করলে সামরিক আইন প্রত্যাহারের পক্ষে প্রস্তাব পাস হয়।
সামরিক আইন প্রত্যাহারের প্রস্তাব পাসের পর জাতীয় পরিষদের স্পিকার উ উন সিক বলেছেন, ‘গণতন্ত্র রক্ষায় সংসদ জনগণের পাশে থাকবে।’
এদিকে বুধবার ভোরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট সামরিক আইন প্রত্যাহার করে নেন। পার্লামেন্ট সদস্যরা গভীর রাতে ভোটাভূটির আয়োজন করলে চারিদিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সেনাবাহিনী পার্লামেন্টভবনসহ আশপাশের এলাকা ঘিরে রাখে।
প্রেসিডেন্ট ইউন সুক সামরিক শাসন জারির কারণে পার্লামেন্টে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হতে পারেন। তিনশ’ আসন বিশিস্ট পার্লামেন্টে বিরোধী লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা রয়েছে।