সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো থ্যালেসের অফিস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন এদেশে ফরাসী রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুয়ে। রাষ্ট্রদূতের বাসায় অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।

মহাকাশে বাংলাদেশের একমাত্র স্যাটেলাইট, ৩.৭ টন ওজনের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ডিজাইন এবং তৈরি করেছে ফ্রান্সের এই কোম্পানি থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস। এছাড়া থ্যালেস বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর জন্য নানা সরঞ্জাম, বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের আধুনিকায়ন এবং সশস্ত্রবাহিনীর নানা যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। বাংলাদেশে ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তির লক্ষ্য পূরণে থ্যালেস তার নিবিড় গবেষণালব্ধ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সহায়তা এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের মাধ্যমে বড় ভূমিকা রাখবে।

২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে অন্তর্ভূক্তিমুলক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সেবা এবং জ্ঞান ও উদ্ভাবনভিত্তিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করে বিশেষজ্ঞ, শিল্প এবং সরকারের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করতে চায় ফরাসি কোম্পানি থ্যালেস। এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য নিবিড় সহযোগিতা এবং দীর্ঘমেয়াদি গ্রাহকসেবা দেয়ার লক্ষ্যে থ্যালেস বাংলাদেশে প্রথম অফিস চালু করল।

বাংলাদেশকে বিমান চলাচলের আঞ্চলিক হাব বা ক্রেন্দ্রবিন্দু করা এবং মহাকাশে বাংলাদেশের আকাঙ্খাকে জোরালোভাবে সমর্থন করে থ্যালেস।

গত ১১ অক্টোবর ঢাকায় নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুয়ের বাসায় এক অনুষ্ঠানে থ্যালেসের বাংলাদেশ অফিসের ফলক উন্মেচন করা হয়। ফলক উন্মোচনের সময় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে থ্যালেসের এশিয়া-ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট গাই বোনাসি উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির বেশ কিছু গ্রাহকসহ বড় সংখ্যক অংশীজন।

বাংলাদেশে উচ্চমানের প্রযুক্তিসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে থ্যালেসের সুনাম আছে। মহাকাশে বাংলাদেশের একমাত্র স্যাটেলাইট, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ডিজাইন এবং তৈরি করেছে ফ্রান্সের এই কোম্পানি থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস। বঙ্গবন্ধু-১ কৃত্রিম উপগ্রহটি ২০১৮ সালের মার্চে ১১৯.১° পূর্ব দ্রাঘিমার ভূ-স্থির স্লটে স্থাপিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করা কৃত্রিম উপগ্রহটি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তিমালিকানাধীন মহাকাশযান সংস্থা স্পেস এক্স থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। বাংলাদেশের নাগরিকদের সরাসরি ঘরে বসে টিভি, রেডিও, টেলিমেডিসিন, শিক্ষা এবং ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সহ বিস্তৃত টেলিযোগাযোগ পরিষেবা দেয়ার জন্য এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করে সরকার।

থ্যালেস বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে দূরপাল্লার নজরদারি রাডার সরবরাহ করছে এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য যুদ্ধ ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি সরবরাহ করছে। সশস্ত্রবাহিনীর বাইরে দক্ষিণ এশিয়ার বিমান চলাচল কেন্দ্র হওয়ার জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্খাকে সহায়তা করতে থ্যালেস হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্টোল আধুনিকায়নে কাজ করছে। এর মধ্যে আছে ৪৫ মিটার উচু এয়ার ট্রাফিক কনট্রোল টাওয়ার ও এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সিস্টেম তৈরি করা যা ২০২৪ সালে শেষ হবে হবে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে থ্যালেসের এসব সহায়তা প্রযুক্তির আধনিকায়নের যে পরিবেশ তৈরি করছে তা ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতিতে সহায়তা করছে। এই বিবর্তন বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠী গ্রহণ করেছে এবং থ্যালেস যে প্রযুক্তিগত উন্নত সরঞ্জামগুলি সরবরাহ করেছে তা থেকে তরুণরা সর্বোপরি বাংলাদেশ ক্রমাগত উপকৃত হবে।

বাংলাদেশে থ্যালেসের কান্ট্রি ডিরেক্টর বেনোয়া নালিন বলেন,‘‘ বাংলাদেশে থ্যালেসের কার্যালয় চালু করা একটা মাইলফলক বলে আমি মনে করি। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের গ্রাহক এবং অংশীজনদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে সক্ষম হবো। গত কয়েক বছরে আমরা বাংলাদেশে এয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন কমিশন-বিটিআরসি এবং যন্ত্রপাতি সরবরাহের জন্য বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছি। স্যাটেলাইট, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল, প্রতিরক্ষা, ডিজিটাল আইডেন্টিটি সেক্টর এবং সাইবার সিকিউরিটি ক্ষেত্রে প্রমাণিত অভিজ্ঞতা সঙ্গে নিয়ে থ্যালেস ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য ও আকাঙ্খাকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *