সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

বহুল আকাঙ্ক্ষিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন হচ্ছে শনিবার (৭ অক্টোবর)। এটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে, এখনই পুরোপুরি উদ্বোধন হচ্ছে না তৃতীয় টার্মিনালের অপারেশনাল কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৪ সালের শেষের দিকে থার্ড টার্মিনালের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হবে। সেই সঙ্গে বাড়বে বিমানবন্দরের যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা।

বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানায়, বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি বছর ৬৫ থেকে ৮০ লাখ যাত্রী চলাচল করেন। এটি-ই বর্তমানে সক্রিয় দুই টার্মিনালের সর্বোচ্চ সক্ষমতা। তবে, থার্ড টার্মিনাল হলে সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে দিগুণ।

তৃতীয় টার্মিনালের রিভাইজড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) থেকে জানা যায়, থার্ড টার্মিনালে দুই লাখ ২৬ হাজার বর্গমিটারের তিনটি ফ্লোরের একটি মডার্ন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন রয়েছে। বর্তমানে বিমানবন্দরের ১ ও ২ নম্বর টার্মিনালে বছরে ৬৫ থেকে ৮০ লাখ যাত্রী চলাচল করেন। নতুন টার্মিনাল চালু হলে ধারণক্ষমতা হবে দিগুণ। অর্থাৎ অন্তত এক কোটি ২০ লাখ মানুষের পা পড়বে এখানে।

বেবিচক সূত্রে আরও জানা যায়, যাত্রীদের সক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি থার্ড টার্মিনালের কারণে বাড়বে বিমানবন্দরের কার্গোসক্ষমতা। বর্তমানে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের উত্তর পাশে আলাদা আমদানি-রফতানি কার্গো ভিলেজ ভবন করা হয়েছে। পৃথক কার্গো ভিলেজগুলো থাকবে বিশ্বের উন্নত দেশের বিমানবন্দরের মতো সর্বাধুনিক সুবিধাসম্বলিত। এটি মোট ৬৩ হাজার বর্গমিটারের। বর্তমানে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের ধারণক্ষমতা ২ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন টন। তৃতীয় টার্মিনাল হলে ধারণক্ষমতা গিয়ে ঠেকবে চার মিলিয়ন টনে। নতুন এ কার্গো ভিলেজ দেশের রফতানি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

তবে বেবিচক জানিয়েছে, থার্ড টার্মিনালের কার্গো অপারেশন ২০২৪ সালের শেষের দিকে শুরু হবে।

এদিকে, যাত্রীসক্ষমতা বাড়ায় বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহ দেখিয়েছে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। বাংলাদেশের‍ এয়ারলাইন্সগুলোও তাদের ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে মুখিয়ে রয়েছে ১২টি বিদেশি এয়ারলাইন্স। তাদের কেউ কেউ বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে, মৌখিকভাবেও জানিয়ে রেখেছে।

ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন চেয়ে আবেদন করা এয়ারলাইন্সগুলো হলো- শ্রীলঙ্কার ফিটস এয়ার, দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়ান এয়ার, আবুধাবিভিত্তিক উইজ এয়ার, ইন্দোনেশিয়ার গারুদা ইন্দোনেশিয়া, ইরাকের ইরাকি এয়ারওয়েজ, জর্দানের রয়াল জর্দানিয়ান, ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স, এয়ার ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ।

এসব এয়ারলাইন্স ছাড়াও বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য মৌখিকভাবে বেবিচককে জানিয়েছে আরও চারটি এয়ারলাইন্স। পাকিস্তানের পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ), উজবেকিস্তানের উজবেকিস্তান এয়ারওয়েজ, সুইজারল্যান্ডের সুইস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ও রিয়াদ এয়ার।

উল্লেখ্য, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর অনুমোদন পায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)। শুরুতে টার্মিনালটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় সাত হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। সবমিলিয়ে প্রকল্পটির খরচ দাঁড়ায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকারও বেশি।

নতুন সংকটে হেলিকপ্টার পরিবহন ব্যবসা

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে পাঁচ হাজার ২৫৮ কোটি তিন লাখ ৮৮ হাজার টাকা। বাকি ১৬ হাজার ১৪১ কোটি দুই লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা- জাইকা।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *