বার্ধক্যজনিত কারণে গত ১৭ ডিসেম্বর জুহু হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলিউডের বরেণ্য অভিনেত্রী তনুজাকে। শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। তবে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এ খবর প্রকাশ করেছে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে একটি সূত্র সংবাদ সংস্থাটিকে বলেন, ‘তিনি এখন অনেকটা ভালো আছেন। দু-একদিনের মধ্যে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।’
১৯৪৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ের এক মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তনুজা মুখার্জি। বাবা কুমারসেন সমর্থ ছিলেন কবি ও চলচ্চিত্র পরিচালক; মা শোভনা সমর্থ চল্লিশের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় তিন মেয়ে আর এক ছেলে। তনুজা দ্বিতীয় সন্তান।
মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন তনুজা; সক্রিয় ছিলেন ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কম ছিল। তাই অভিনয়জগতে মনোনিবেশ করেন। তার গুণী মায়ের সাজসজ্জা খুব ভালো লাগত। বড় বোন নূতনের সঙ্গে ১৯৫০ সালে ‘হামারি বেটি’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম চলচ্চিত্র অভিনয় করেন। ১৯৬০ সালে ‘ছাবিলি’ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে অভিষেক হয় তার। এ সিনেমার পরিচালক ছিলেন তার মা শোভনা। এরপর একে একে অসংখ্য বাংলা ও হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। কিদার শর্মার ‘হামারি ইয়াদ আয়েগি’ (১৯৬১) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতির শিখরে পৌঁছান।
গত শতকের ষাটের দশকে তনুজা কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্রে সমানতালে অভিনয় শুরু করেন। তিনি মনে করেন, বাংলা চলচ্চিত্র তাকে অন্য মাত্রা দিয়েছে এবং তাতে তিনি আত্মতৃপ্তি পেতেন। বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি উত্তমকুমারের বিপরীতে অভিনয় করেন ‘দেয়া নেয়া’ (১৯৬৩), ‘অ্যান্টনি-ফিরিঙ্গি’ (১৯৬৭), ‘রাজকুমারী’ (১৯৭০) অন্যতম। উত্তমকুমার ছাড়াও তিনি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে কয়েকটি ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
১৯৭৪ সালে তনুজা বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক সমু মুখার্জিকে বিয়ে করেন। কাজল ছাড়াও তাদের আরেক মেয়ে তানিশা মুখার্জিও অভিনয় করছেন। ২০০৮ সালের ১০ এপ্রিল সমু মুখার্জি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
জীবনে অনেক সংগ্রাম ও সাধনা করে তনুজা ভারতীয় চলচ্চিত্রে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন। ইদানীং তার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। চেহারায় বয়সের ছাপ স্পষ্ট। এর আগে পেটে ব্যথার জন্য মুম্বাইয়ের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়; পরে পেটে টিউমার ধরা পড়ায় তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচার করতে হয়।