ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নাগরিক তথ্য ফাঁসের সঙ্গে যদি কেউ জড়িত থাকে বা সহায়তা করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

রোববার (৯ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকীতে ‘জাতীয় শোক দিবস’ পালন উপলক্ষে নিরাপত্তাবিষয়ক আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এ বিষয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করার মতো কোনও উপাদান এখনো হাতে পায়নি। আমাদের সাইবার ইউনিট এ বিষয়ে কাজ করছে। আগে দেখতে হবে, কী ফাঁস হয়েছে। সেগুলো বের করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।

এনআইডি সার্ভার থেকে তথ্য চুরি হওয়া নিয়ে এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের অধীনে এখনও এনআইডির কার্যক্রম শুরু করিনি। এখনও এই কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের হাতেই রয়েছে। যে ঘোষণাটা দেওয়া হয়েছে, আইনি কিছু জটিলতা রয়েছে সেগুলো শেষ করে আমরা খুব শিগগিরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আসবে। আমরা তখন থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করতে পারব। এখনও যেগুলো আসছে, আমরাও শুনছি। ডিটেইল জেনে উত্তর দিতে হবে, এই মুহূর্তে আমাদের কাছে ডিটেইলটা নেই। আপনি যে রকম শুনেছেন, আমরাও ঠিক সেরকমভাবেই শুনছি। এটি আরেকটু না জেনে উত্তর দেওয়ার মতো তথ্য আমার কাছে নেই।

মন্ত্রী বলেন, কেউ দায়ী থাকলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, আগে তো আমাকে আইডেন্টিফাই করতে হবে, যে ঘটনাটি কী ঘটেছে? কতখানি ঘটেছে, কী ঘটেছে, কতখানি ফাঁস হয়েছে- সেগুলো তো আমরা অবশ্যই দেখব। দেখে যদি দেখি, কেউ এর সঙ্গে যুক্ত আছে, কেউ এর সঙ্গে সহযোগিতা করেছে; অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। সেই জায়গাটিতে আমরা কাউকে ছাড় দিই না। আগে পুরো বিষয়টি জেনে নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

তিনি আরও বলেন, এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অর্পণ হতে যাচ্ছে। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবই। সেখানে কোনও ফাঁক-ফোঁকর থাকবে না। যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার, আমরা অবশ্যই নেব। আমরা অবশ্যই নিরাপত্তা রক্ষা করব।

জাতীয় শোক দিবসে থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সারা দেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, এ দিনটি পালনে কোনও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ এলে, তা কীভাবে মোকাবিলা করা হবে; তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আলাপ শেষে আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, শোক দিবসে সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। এসব এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধানমণ্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণসহ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও গাড়ি পার্কিংয়ে যা যা প্রয়োজন, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জাতির পিতার পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অন্যান্য শহিদদের বনানী কবরস্থানে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকরা ধানমণ্ডি ও বনানীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। জাতির পিতার সমাধিস্থলের অনুষ্ঠানসহ শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশ ব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক সংগঠন আয়োজিত সব অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

‘অনুষ্ঠানস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ও ডুবুরিসহ ফায়ার সার্ভিসের সব ধরনের জনবল উপস্থিত থাকবেন। ধানমণ্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, বনানী কবরস্থান, টঙ্গিপাড়াসহ সারা দেশে র‌্যাবের দৃশ্যমান উপস্থিতি থাকবে। সারা দেশব্যাপী নাশকতা প্রতিরোধে ও নিরাপত্তা রক্ষায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে।’‍

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ১৫ আগস্ট সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। এক্ষেত্রে পতাকা উত্তোলনে যথাযথ বিধি মানা হচ্ছে কিনা; সেদিকেও নজর থাকবে। সামাজিক মাধ্যমে যাতে অপপ্রচার চালাতে না পারে, সেদিকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি থাকবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...