ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বৈরাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম। আমাদের দাবি ছিল চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেটি করেনি। উল্টো ধারণ-ক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।’
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধের ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা নতুন ছয় দফা দাবি জানিয়ে সরকার ও ঢাবি প্রশাসনকে চার ঘণ্টা আল্টিমেটাম দিয়েছে। অন্যথায় নতুন সংবাদ সম্মেলন করে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের‘ ফোকাল পারসন আব্দুর রহমান বণিক বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বৈরাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম। আমাদের দাবি ছিল চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেটি করেনি। উল্টো ধারণ-ক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।’
আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা এসব নিয়ে বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি দিয়েছি। সব শেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদে আমরা নীলক্ষেত গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের নিচে অবস্থানকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা সরকার ও ঢাবি প্রশাসনকে ছয় দফা দাবি জানিয়েছি। এ সব দাবি পূরণে তাদের চার ঘণ্টা আল্টিমেটাম দিয়েছি। যদি এ চার ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হয় তাহলে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তাদের সাত দফা হলো-
১. ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘাতের দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং প্রো-ভিসি মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে হবে।
২. ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্য হামলাসহ ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের উপর নিউমার্কেট থানা পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় এসি, ওসিসহ জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
৩. ঢাবি শিক্ষার্থী কর্তৃক ইডেন কলেজ ও বদরুন্নেসা কলেজসহ সাত কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং অশালীন অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪ . সাত কলেজের সমন্বয়ে গঠিত বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সাত কলেজের অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক সম্পর্কের চূড়ান্ত অবসান ঘটিয়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে অধিভুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রকাশের তারিখ ঘোষণা করতে হবে।
৫ . উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষার্থী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ইউজিসি সদস্য এবং ঢাবি ভিসির সমন্বয়ে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি টিমের সঙ্গে তাৎক্ষণিক উচ্চ পর্যায়ের মিটিংয়ের মাধ্যমে এ সংঘাতময় পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট এরিয়ায় সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।