

দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার৷ রোববার (১৮ আগস্ট) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউল্লাহর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে৷
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২৩-এর ৩৪(ক) ধারার আওতায় সরকার কর্তৃক জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিরূপ নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে এবং এর ফলে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বা হতে পারে।
এ অবস্থায় ওই ধারার অধীনে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব বিবেচনা আপাতত স্থগিত থাকবে মর্মে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, বাধ্য না হলে বিদ্যুৎ, তেল ও গ্যাসের দাম বাড়াবে না সরকার।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম যদি আর না বাড়ে বুঝতে হবে আমরা ভালো কাজ করছি। কিন্তু দাম যদি আবার বাড়তে থাকে, তাহলে ভালো কাজটা কীভাবে করলাম? পরিসংখ্যান দিয়ে আপনাকে আর মূল্যায়ন করা হবে না।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ২০১০ সালের বিদ্যুতের বিশেষ বিধান আইন নিয়ে অনেকে লিখেছেন। এজন্য আজকে আমি সিদ্ধান্ত দিয়েছি ২০১০ সালের আইনের অধীনে বর্তমানে যেসব জিনিস প্রক্রিয়াধীন হচ্ছে, আপাতত সেগুলো মুলতবি থাকবে। তবে আগে যেগুলো হয়ে গেছে চুক্তি-টুক্তি, সেগুলো বহাল থাকবে। আইনটিকে আমরা রিভিউ করবো, এরপর সিদ্ধান্ত হবে। এটি আমার একার ব্যাপার না। এটি উপদেষ্টা পরিষদের ব্যাপার।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে ঘন ঘন বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি। সরকার একটা ক্ষমতা নিয়েছে যে, বিইআরসি লাগবে না সরকার ইচ্ছা করলে নিজেরা দাম বাড়াতে পারবে। এটি হচ্ছে আইন পরিবর্তনের বিষয়। এটিও আমার একার বিষয় নয়, উপদেষ্টা পরিষদের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, তবে মানুষের প্রত্যাশা এই ধারা (সংশোধিত বিইআরসি আইনের) ব্যবহার করে আপাতত কোনো মূল্যবৃদ্ধি হবে না। আপাতত যদি মূল্যবৃদ্ধি করতে হয় তাহলে বিইআরসির যে বিধান আছে সেই বিধান অনুযায়ী স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করে, সবার কাছে জেনে-শুনে তারপর করতে হবে।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, এছাড়া সিদ্ধান্ত হয়েছে দুই বিভাগই একটা ব্যয় সাশ্রয়ী পরিকল্পনা দেবে। এখন রেভিনিউ তো হঠাৎ বাড়বে না। এতদিন অচল অবস্থা ছিল, রেভিনিউ আহরণ ব্যাহত হয়েছে। যত ধরনের বাহুল্য ব্যয় আছে এবং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প সব বাদ দিতে হবে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, আগের সরকার করেছে তাই সবকিছু খারাপ ফেলে দাও, এটা কিন্তু হবে না। আপনি বাচ্চাকে গোসল করিয়েছেন, ময়লা পানিটা ফেলে দেন, বাচ্চাকে তো ফেলে দেবেন না। আগের সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত যেগুলো, সেগুলো কিন্তু বাদ হবে না।