আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে ভূমি ও গৃহহীন মানুষ থাকবে না। প্রথমে বিভাগ, তারপর জেলা পর্যায়ে খাদ্য সংরক্ষণাগার করা হবে। দেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা হবে। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবসের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ণসহ বিভিন্ন প্রকল্পে পুনর্বাসিতদের খোঁজ-খবর রাখতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের অনেক দায়িত্ব আছে। সরকারি কর্মচারীরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চাকরি করে, জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হয়। এজন্য জনপ্রতিনিধিদের সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, জনগণের কাছে দেয়া ওয়াদা রক্ষা করুন। কমিশনের কথা চিন্তা করে প্রকল্প নেয়া যাবে না। জনগণ ও প্রকৃতি-পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই প্রকল্প নিতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থ সাশ্রয় করে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর এ শক্তিশালী স্থানীয় সরকারের মাধ্যমেই দেশ গড়তে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত উন্নত করতে শক্তিশালী স্থানীয় সরকার করার উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ।
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। শুধু নেয়ার জন্য কোনো প্রকল্প নেবেন না, জনগণের কাজে লাগে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণের দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। জলাধার যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। যারা বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন, তাদের বিদ্যুৎ বিল অন্যদের চেয়ে বেশি হবে। অর্থাৎ তাদের বিদ্যুতের রেট অন্যদের চেয়ে বেশি হবে। নির্দিষ্ট ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারে কম বিল দেবেন স্বল্পআয়ের ব্যবহারকারীরা।
এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে উল্লেখ করে সমন্বিত চাষাবাদ বা সমবায়ের মাধ্যমে চাষাবাদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেক এলাকায় মাস্টারপ্ল্যান করে কাজ করলে জমির উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও উৎপাদিত পণ্যের যথাযথ বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় সবাইকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক গ্রামে নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করছে সরকার। সবার নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রতিটি গ্রামে মাস্টারপ্ল্যান করে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে হবে। যেন স্বাস্থ্যকরভাবে মানুষ বাঁচতে পারে। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। কারণ, একটি রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে স্থানীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা করবে, তবে স্থানীয় সরকার স্থানীয়ভাবেই দেশের উন্নয়ন করবে বলেনও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান বলেন, জনগণের আস্থা-বিশ্বাস যারা অর্জন করতে পারে না, ভোটে তারাই ব্যর্থ হয়। এ সময় দেশে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।