দেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক সময়ে জেমিনি সি ফুড লিমিটেডের শেয়ারের দাম ও লেনদেন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যা অস্বাভাবিক এবং কারসাজি বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তাই কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত করতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। ডিএসইকে আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে কমিশন। সম্প্রতি এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি।
বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, সামপ্রতিক সময়ে জেমিনি সি ফডের শেয়ারের দাম ও লেনদেন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে যে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ২৮ মার্চ থেকে ৭ মে পর্যন্ত এ সময়ের মধ্যে ৪৫৬ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৯৩৪ টাকা ৪০ পয়সা হয়েছে বা ১০৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা অস্বাভাবিক এবং কারসাজি বলে মনে হয়েছে কমিশনের।
তাই এ বিষয়ে গত ১ জানুয়ারী থেকে পরবর্তী সময়ে জেমিনি সি ফডের শেয়ারের লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এই চিঠি পাওয়ার বিশ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়ে জানয়েছে বিএসইসি।
প্রসঙ্গত, এরআগে কোম্পানির শেয়ারে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় কারসাজির মাধ্যমে প্রায় ৪৫০ টাকা বা ৩১১ শতাংশ বা সাড়ে ৩ গুন বৃদ্ধি করা হয়। এতে বিষয়টি আমলে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিএসইসি। পরে তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগের কাছে দেয়া হয়। কিন্তু এরপরও কোম্পানিটির শেয়ারে থেমে নেই কারসাজি। প্রথম দফায় দুই বছরের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধির পর শেয়ারটির দাম কমতে শুরু করে। এতে প্রায় সাড়ে ৪২ শতাংশ কমার পর শেয়ারদর পুনরায় কারসাজির মাধ্যমে বাড়ানো চলছে। ফলে তদন্ত এবং শাস্তির কোনো তোয়াক্কা না করইে কারসাজি চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।
কোম্পানিটির শেয়ার দর ও লেনদেনে কারসাজির চেষ্টা, ইনসাইডার ট্রেডিং এবং অন্যান্য কার্যকলাপ তদন্তে গত বছর ২৫ অক্টোবর দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে বিএসইসি। কমিটিকে আদেশ জারির আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রকিবুর রহমান ও সহকারী পরিচালক ফয়সাল ইসলাম। সেই তদন্ত শেষে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে কমিটি এবং বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগে কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানা যায়।