ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে শতবছরের বেশি সময় ধরে ঐতিহ্য ধরে রাখা কুষ্টিয়ায় বিখ্যাত তিলের খাজা। তবে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি মিললেও নানা প্রতিবন্ধকতায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না এই ক্ষুদ্রশিল্প। সরকারী পৃষ্টপোষকতার অভাব ও উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে এই শিল্পটি হারিয়ে যেতে বসেছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
প্রায় দেড়শ’ বছর আগে কুষ্টিয়ার তিলের খাজার প্রচলন ঘটে। খাজা তৈরির প্রধান উপকরণ তিল ও চিনি। চুলায় চাপানো বড় লোহার কড়াইয়ের মধ্যে চিনি দিয়ে আগুনে জাল দিয়ে তৈরি করা হয় ‘সিরা’। নির্দিষ্ট সময় পর চুলা থেকে নামিয়ে সিলাপে ঢালা হয়। হালকা ঠান্ডা হলে চিনির সিরা জমাট বেঁধে যায়। তখন শিংয়ের মতো দো-ডালা গাছের সঙ্গে হাতে টানা হয় জমাট বাধা সিরা। একপর্যায়ে বাদামি থেকে সাদা রঙে পরিণত হলে কারিগর নিপুন হাতে ভেতরের অংশটা ফাঁপা করে খাজা তৈরি করেন। নির্দিষ্ট মাপে কেটে তাতে মেশানো হয় খোসা ছাড়ানো উন্নত মানের তিল। এভাবেই তৈরি হয় তিলের খাজা।
সম্প্রতি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি মিলেছে এ ক্ষুদ্রশিল্পের। তবে এতে সন্তুষ্ট নন তিলের খাজা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। তারা বলছেন, সরকারী পৃষ্টপোষকতার অভাব ও তিলের খাজা তৈরীর উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে হারিয়ে যেতে বসেছে এই ক্ষুদ্র শিল্পটি।
জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান। একটা সময়ে পাল সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবার গুড়ের তিলের খাজা তৈরি করতো।
তাদের কাছ থেকে কৌশল রপ্ত করে ৭০-এর দশকে কুষ্টিয়া শহরের চর মিলপাড়ায় কয়েকটি তিলের খাজা তৈরির কারখানা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে গুড়ের বদলে চিনি ব্যবহার করে তৈরি করা হয় বিখ্যাত এই তিলের খাজা।