জয়পুরহাট জেলায় সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচির পাশাপাশি চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সরিষার চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাটির গুণাগুন ও আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ । জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জয়পুরহাট জেলা মূলত বরেন্দ্র অঞ্চলের আওতাভুক্ত হওয়ার কারণে সরিষা চাষের জন্য মাটির গুণাগুন ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী।
বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে প্রণোদনা কর্মসূচি চালু করায় জেলায় বিগত সাত বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অধিক হারে সরিষার চাষ হয়েছে জয়পুরহাট জেলায়। এরমধ্যে রয়েছে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ১০ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিরে বিপরীতে চাষ হয়েছে ১১ হাজার ১২৫ হেক্টর। এতে সরিষা উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৪২৪ মেট্রিক টন।
২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১১ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিরে বিপরীতে চাষ হয়েছে ১১ হাজার ৩১৫ হেক্টর। এতে সরিষা উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৫৯৪ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১১ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিরে বিপরীতে চাষ হয়েছে ১১ হাজার ৫২৫ হেক্টর। এতে সরিষা উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৬১৬ মেট্রিক টন। ২০২০-২১ অর্থ বছরে ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিরে বিপরীতে চাষ হয়েছে ১১ হাজার ৪২৫ হেক্টর। এতে সরিষা উৎপাদন হয়েছে ২১ হাজার ১১০ মেট্রিক টন। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ১১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিরে বিপরীতে চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৮৫৫ হেক্টর। এতে সরিষা উৎপাদন হয়েছে ২১ হাজার ২১০ মেট্রিক টন ।
২০২২-২০২৩ ফসল উৎপাদন মৌসুমে কৃষি প্রণোদনার আওতায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষ হয়েছে ১৪ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে। এতে সরিষার উৎপাদন হয়েছে ২৪ হাজার ২৭৫ মেট্রিক টন এবং চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে জেলায় সরিষা চাষের ২১ হাজার ৩৪৯ হেক্টরের জমির বিপরীতে চাষ হয়েছে ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে। এতে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে এবার। জেলার গ্রামীণ পথঘাট এখন সরিষার হলুদ রং এ ভরে উঠেছে।
কৃষি বিভাগ আরো জানায়, উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা চাষ করার জন্য বিএডিসি ১০ হাজার ৩৫০ কেজি উন্নত মানের সরিষা বীজ সরবরাহ করেছে কৃষকের মাঝে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের সরিষা বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। উন্নত জাতের সরিষা বীজের মধ্যে রয়েছে বারি-১৪, ১৭ ও সম্পদ। জয়পুরহাট সদর, পাঁচবিবি, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলায় সরিষার চাষ তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, অন্যান্য ফষলের তুলনায় খরচ কম হওয়া, সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচির পাশাপাশি সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় জেলায় সরিষার চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়াও সরিষা চাষে সফলতার জন্য কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণসহ উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও উন্নতমানের বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জানান উপ পরিচালক রাহেলা পারভীন। আবহাওয়া ভালো থাকায় সরিষার এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা প্রকাশ করেছন কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা। খবর বাসস।