দেশের ৪৭টি উপজেলায় উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রিন্ট হয়ে পড়ে থাকলেও বিতরণ করেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে ৪৭ উপজেলার ৭২ লাখের মতো স্মার্ট কার্ড বিতরণ করতে পারেনি ইসি। এছাড়া ১৪৩টি উপজেলার স্মার্ট কার্ড এখনও ছাপাতে পারেনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৫১৯টি। এগুলোর মধ্যে বিতরণ শেষ হয়েছে ৩৫০টি উপজেলার স্মার্ট কার্ড। বর্তমানে স্মার্ট কার্ড বিতরণ চলমান আছে এমন উপজেলার সংখ্যা ১১টি। স্মার্ট কার্ড মুদ্রিত হয়েছে কিন্তু বিতরণ শুরু হয়নি এমন উপজেলার সংখ্যা ১৫টি। পার্সোনালাইজেশন সেন্টারে ডেলিভারির অপেক্ষা রয়েছে এমন উপজেলার সংখ্যা ২১টি। আর স্মার্ট কার্ড মুদ্রণ করা হয়নি এমন উপজেলার সংখ্যা ১৪৩টি।
কর্মকর্তারা জানান, ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নাগরিকদের উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ২০১১ সালে আইডিইএ (স্মার্ট কার্ড) প্রকল্পটি হাতে নেয় কমিশন। তারপর দীর্ঘ চার বছর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে স্মার্ট কার্ড তৈরির দিকে এগোয় সংস্থাটি। এক্ষেত্রে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থার টেকনোলজিসের সঙ্গে ওই সময়ের ৯ কোটি ভোটারের জন্য ৯ কোটি ব্ল্যাংক স্মার্ট কার্ড তৈরি করে দিতে ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি চুক্তি করে ইসি। যার মেয়াদ ছিল ১৮ মাস। কিন্তু মেয়াদ বাড়ানোর পরেও ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তিতে উল্লেখিত কার্ড সরবরাহ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে সে বছরের শেষের দিকে অবার্থারের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়।
ইসি কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, অবার্থার ১ দশমিক ৫১ ডলার দরে ৭ কোটি ৭৩ লাখ কার্ড সরবরাহ করতে পেরেছিল। সেই মোতাবেক পূর্বের ১ কোটি ২৭ লাখ নাগরিকের কার্ড ঘাটতি ছিল। এই ক’বছরে ভোটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ভোটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। সব মিলিয়ে আরও প্রায় সাড়ে চার কোটির মতো ব্ল্যাংক কার্ড তৈরি এবং তাতে নাগরিকের তথ্য ইনপুট করে বিতরণে যেতে হবে। এজন্য আইডিইএ দ্বিতীয় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আর ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে তিন কোটি কার্ড দেওয়ার কথা থাকলেও ডলারের দাম বাড়ায় ২ কোটি ৩৬ লাখ ৩৩ হাজার ৭২০টি কার্ড দেবে বিএমটিএফ। অবশিষ্ট কার্ডগুলো প্রকল্পের মেয়াদ শেষে রাজস্ব খাত হতে ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।তবে নতুন প্রকল্প থেকে কার্ড তৈরি ও বিতরণেও তেমন অগ্রগতি নেই। ১৪৩ উপজেলায় প্রায় দেড় কোটির মতো ভোটারের স্মার্ট কার্ড ছাপানোই হয়নি বলে জানিয়েছেন অনেক কর্মকর্তা।
ইসি সচিব শফিউর আজিম এ বিষয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সভায় অবিতরণকৃত কার্ড দ্রুত বিতরণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা এনআইডি সেবাকে সহজ করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি। এজন্য কর্মকর্তাদের মনিটরিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।