সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিচালিত “কোটা পুনর্বহাল চলবে না” টেলিগ্রাম গ্রুপে অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের এই ঘোষণা দেন।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার (২ আগস্ট) সারাদেশের মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজের পরে দোয়া-কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব প্রার্থনালয়ে প্রার্থনা এবং জুমার নামাজের শেষে ছাত্র-জনতার গণমিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে, শ্রমিক, পেশাজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবী, আলেম-ওলামাসহ বাংলাদেশের সব স্তরের নাগরিকদের আগামীকালের ‘প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফল করার আহ্বান জানানো হয়।

মসজিদের ইমাম ও খতিবদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, আপনারা জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে চুপ থাকবেন না। মসজিদের মিম্বর থেকে প্রতিবাদের ঘোষণা দিন। মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনারাই জাতির দুর্দিনের কাণ্ডারি। এই দুঃসময়ে ঘরে বসে না থেকে গণহত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং ৯ দফা আদায়ের দাবিতে বাদ জুমা মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে ‘ছাত্র জনতার গণমিছিল’ মিছিল বের করুন।

শিক্ষকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, আজ ছাত্রসমাজ ঘরে শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। প্রতিমুহূর্তে কাটাতে হচ্ছে গ্রেপ্তার ও গুম হওয়ার আতঙ্কে। শহীদ ও গুম হয়ে যাওয়া মানুষের স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠছে বাংলার আকাশ বাতাস। এছাড়াও আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলীর ওপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষিকা শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছে পুলিশের কিছু কর্মকর্তা। এই ঘৃণ্য হামলার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর অমানবিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জন সমন্বয়কসহ অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় ৬ সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দিলেও এখনো ডাকসুর সাবেক সমাজ সেবা সম্পাদক আক্তার হোসেন, সমন্বয়ক আরিফ সোহেলসহ অসংখ্য ছাত্র জনতাকে কারাগার ও রিমান্ডে নির্যাতন করছে। জুলুম নির্যাতনে নিষ্পেষিত ছাত্র জনতা মুক্তির প্রহর গুনছে। অসংখ্য ছাত্র জনতা হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার শঙ্কা নিয়ে। অনেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ চোখ, কান, হাত, পা কিংবা শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছে।

এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থে নয় উল্লেখ করে বলা হয়, আমাদের আন্দোলন আপনার ও আপনার সন্তানের মুক্তির জন্য। কী অপরাধ ছিল আমাদের? সাংবিধানিক অধিকার চাওয়াটা কি আমাদের অপরাধ? কী অপরাধে শত শত ভাইদের হত্যা করা হলো? আমরা এর জবাব জানি না। কিন্তু এর জবাব ও বিচার না নিয়ে আমরা আমাদের আন্দোলনকে থামাবো না। জাতির এই দুর্দিনে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে শহীদ, আহত, পঙ্গু ও গ্রেপ্তার হওয়া সবার স্মরণে আগামীকাল দেশব্যাপী ‘প্রার্থনা-কবর জিয়ারত ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি ঘোষণা করছি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *