ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪

বিজ রিপোর্ট

বাংলাদেশে চীনের কোনো ঋণের ফাঁদ নেই। আবার, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো। তাই বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হবে না বলে মনে করেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তিনি বলেন, বাংলাদেশে জ্বালানি সহায়তা দেয়ার বিষয়ে কথা হচ্ছে। 

শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের সিংহভাগই ছিল পশ্চিমা বাণিজ্যিক ঋণ এবং বহু-আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ। যেখানে মোট বৈদেশিক ঋণের ১০ ভাগ ছিলো চীনা ঋণ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে চীনা ঋণের পরিমান ছয় শতাংশ। তাই, চীনের ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হবে কিনা, সেই প্রশ্ন নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা চলছিলো। 

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) ‘ডিকাব টক’ নামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, চীন প্রতিবেশীসহ বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ উন্নয়নে বিশ্বাসী।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় পশ্চিমা ঋণই বেশি। সেখানে চীনা ঋণ মাত্র ১০ শতাংশ। আর বাংলাদেশে চীনা ঋণ মাত্র ৬ শতাংশ। শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশে চীনা ঋণ অনেক কম। আর বাংলাদেশে শুধু চীনই ঋণ দেয় না। অনেক দেশই ঋণ দেয়। তাই চীনা ঋণের ফাঁদ কথাটি অমূলক।

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে আহত-নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করতে আগ্রহী। 

বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে চীনের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিশ্রুতিশীল জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশকে ক্লিন অ্যানার্জি খাতে সহয়তা দিতে আগ্রহী চীন। কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লিন অ্যানার্জির লক্ষ্যে সোলার প্যানেল বসাতে চীনা কোম্পানি বিনিয়োগ করতে চায়।

তিনি বলেন, চীনা বাজারে ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশি পণ্য শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে। আগামী দিনে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা আরো বাড়বে বলে প্রত্যাশা করেছেন রাষ্ট্রদূত।

লি জিমিং বলেন, চীন প্রতিবেশীসহ বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ উন্নয়নে বিশ্বাসী। চীন ভারতের কৌশলগত প্রতিযোগী নয়। আমরা একযোগে উন্নয়ন ও ভূরাজনৈতিকভাবে একে অপরকে সহযোগিতা করতে চাই। আমি নিজেও ভারতের বিগ ফ্যান। ভারতে আমার অনেক বন্ধু রয়েছেন। বে অব বেঙ্গল অঞ্চলে আমরা কোনো সংঘাত চাই না।

রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতোই মত পোষণ করে এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানে আলোচনা ও আলোচনার গুরুত্ব তুলে ধরে। রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত লি বলেন, চীন রোহিঙ্গাদের দ্রুত তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডিকাব প্রেসিডেন্ট রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈনুদ্দিন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...