ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলাকে জেলা শহরের সঙ্গে যুক্ত করতে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে চালু হচ্ছে ফেরি চলাচল। আগামী জুন মাসেই এই ফেরি সার্ভিস চালু হতে যাচ্ছে বলে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন। এতে করে জেলা শহ‌রে যাতায়া‌তের ভোগা‌ন্তি থে‌কে মু‌ক্তি পে‌তে যা‌চ্ছে ব্রহ্মপুত্র বি‌চ্ছিন্ন রৌমারী ও রাজীবপুর উপ‌জেলাবাসী।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি’র একটি প্রতিনিধি দল চিলমারী নদী বন্দর পরিদর্শন করেছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া কুড়িগ্রাম সফরে এসে রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলা পরিদর্শনে যান। ওই সময় জেলা শহরের সঙ্গে রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলাকে সংযুক্ত করে ব্রহ্মপুত্র নদে একটি ফেরি চালুর জন্য স্থানীয় জনগণ দাবি জানায়। মূখ্য সচিব তার সফর সঙ্গী নৌ পরিবহন সচিব ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চালুর জন্য সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটির সদস্যদল চিলমারী নদী বন্দর এলাকা পরিদর্শন এবং সেখান থেকে ফেরি চালুর সুবিধা অসুবিধা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এসময় বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, রৌমারী থেকে জেলা শহরের যাতায়াতের জন্য ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য কয়েকটি ফেরি রুট রয়েছে। আমরা সবকয়েকটি নৌরুট পরিদর্শন করবো। এক্ষেত্রে নদীর গতিপথ, জনচাহিদা এবং ব্রহ্মপুত্র নদের বারবার গতি পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই আমরা ফেরিঘাটের উপযুক্ততা নির্ধারণ করবো। যেহেতু চিলমারী নদী বন্দরকে ঘিরে সরকারের একটি পরিকল্পনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে চিলমারী নদী বন্দরকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

চিলমারী-রৌমারী ফেরি ঘাট সম্ভাবতা যাচাই কমিটির সদস্যগণ চিলমারী নদী বন্দর পরিদর্শন শেষে ব্রহ্মপুত্র নৌপথে রৌমারী যান। সেখানে তারা কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন।

চিলমারী-রৌমারী ফেরিঘাট সম্ভাবতা পরিদর্শনে আসেন বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন এবং বিআইডব্লিউটিসি’র পরিচালক(বাণিজ্য) এসএম আশিকুজ্জামান, জেনারেল ম্যানেজার মেরিন ক্যাপ্টেন হাসিমুর রহমান চৌধুরী, ম্যানেজার মেরিন আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইঞ্জিনিয়ার সাজিদুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রব মন্ডল এবং চিলমারী উপজেলার চেয়ারম্যান রোকুনুজ্জামান শাহীন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, চিলমারী থেকে ফেরি সার্ভিস চালু হলে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার মানুষ সহজে কুড়িগ্রাম জেলা শহরের জন্য যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়াও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার মানুষ এই ফেরি রুট ব্যবহার করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহজে যাতায়াত করতে পারবে।

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানান, রৌমারী-রাজিবপুরের মানুষের জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য কোনো সড়কপথ নেই। প্রতি বছর তারা ব্রহ্মপুত্র নদী দিয়ে জেলা শহরে যাতায়াতের সময় নৌকা ডুবির শিকার হয়। তাদের দুঃখ লাঘবের জন্য ফেরি সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে সরকার। আগামী জুন মাসের মধ্যে এই ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...