ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪

চিনে আবারও লকডাউনের ফাঁদে পড়ে প্রাণ গেল। এ বার তিন বছরের এক শিশুর। কার্বন মনোক্সাইড থেকে বিষক্রিয়া হয়েছিল তার। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গিয়েছে শিশুটি। লানঝৌ শহরের ঘটনা। এই ঘটনা অতিমারির কালে চিনে নতুন নয়। তবে এই ঘটনার জন্য প্রথম বার ক্ষমা চেয়েছে চিনের প্রশাসন, যা এর আগে কখনও ঘটেনি। ভুল স্বীকার করে জানিয়েছে, ভবিষ্যতে তা শুধরে নেওয়া হবে।

চিনের জিরো কোভিড নীতির কারণে গত প্রায় এক মাস ধরে উত্তর-পশ্চিমে লানঝৌ শহরে লকডাউন চলছে। ঘরবন্দি লাখ লাখ মানুষ। বার বার অভিযোগ উঠেছে, পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল নেই। জরুরি পরিষেবা পাচ্ছেন না নাগরিকরা। সেই চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়েই মারা গেল একটি শিশু।

মঙ্গলবার লানঝৌ পুলিশ শিশুটির মৃত্যুর খবর দিয়েছে। কিন্তু গাফিলতির কারণেই যে মৃত্যু, তা জানায়নি। ওই দিন সন্ধ্যাবেলা চিনের নেটমাধ্যমে বেশ কিছু ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে, একটি শিশুর বুকে চাপ দিয়ে তাকে শ্বাস নেওয়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্য একটি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই আবাসনে কয়েক জন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।

গত বুধবার শিশুটির বাবা টুয়ো (পদবি) নেটমাধ্যমে লেখেন, শিশুটি অসুস্থ হওয়ার পরেও তাঁদের আবাসন থেকে বার হতে দেননি চেকপয়েন্টে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা। খবর দিলেও অনেক দেরিতে এসেছিল অ্যাম্বুল্যান্স। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বচসার পর একটি ট্যাক্সিতে চেপে শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।

বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নেট মাধ্যমে গোটা ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে। শিশুটির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পরিবারকে সমবেদন জানিয়েছে। এর পর লিখেছে, ‘‘আমরা সংবাদ মাধ্যম এবং নেটাগরিকদের সমালোচনা গ্রহণ করছি। ভবিষ্যতে এই ভুল শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করব।’’ লানঝৌ প্রশাসন এও স্বীকার করেছে, অনুরোধ পাওয়ার ৯০ মিনিট পর অ্যাম্বুল্যান্স রওনা হয় হাসপাতাল থেকে। এর থেকে তাদের জরুরি পরিষেবার ঘাটতি প্রকট হয়েছে, তা-ও মেনে নিয়েছে প্রশাসন।

শুধু লানঝৌ নয়, চিনের বহু অংশেই এখন একই ছবি। কড়া লকডাউনের কারণে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে মারা গিয়েছেন মানুষ। এজন্য বার বার নাগরিকরা চিনের শূন্য কোভিড নীতিকেই দায়ী করেছেন। গত জানুয়ারিতে জিয়ানে কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট না থাকায় প্রসূতিকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি হাসপাতালে। গর্ভপাত হয় তাঁর।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...