প্রতি বছর দেশ থেকে চিকিৎসা সেবায় পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মত বাইরে চলে যায় বলে জানিয়েছে প্ল্যানেটারি হেলথ অ্যাকাডেমিয়া (পিএইচএ)। এক্ষেত্রে এই অর্থনৈতিক অপচয় রোধে পিএইচএ কাজ করছে বলেও জানানো হয়েছে।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত পিএইচএ গ্লোবাল সামিটে এ তথ্য জানান পিএইচএ ট্রাস্টি ডা. বাশার এম আতিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, আমাদের অন্যতম দায়িত্ব হলো টেকনোলজি ডেভেলপ করা, ডাক্তারদের ট্রেইন করা, নতুন সার্ভিস লাইন শুরু করা। স্বাস্থ্য সেবার যে বিষয়গুলো দেশে হচ্ছে না, যেসব কারণে রোগীদের দেশের বাইরে যেতে হচ্ছে, সেগুলো যাতে দেশে করা যায় আমরা সেই দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা চাচ্ছি নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে, যাতে তারা দেশের মানুষের জন্য কাজে আসতে পারেন।
ডা. আতিকুজ্জামান বলেন, আমাদের কাজ হলো নলেজ ও টেকনোলজি ট্রান্সফার করা, একজন আরেকজনের কাছ থেকে শেখা এবং বিশ্বায়নের যুগে একজন আরেকজনকে সাহায্য করা।
সংবাদ সম্মেলনে পিএইচএর চেয়ারপারসন ও ট্রাস্টি ডা. তাসবিরুল ইসলাম, পিএইচএ ট্রাস্টি ডা. নাসের খান, ডা. মো. জাকের উল্লাহ, ডা. চৌধুরী এইচ আহসান, ডা. শাকিল ফরিদ ও ওমর শরীফ উপস্থিত ছিলেন।
পিএইচএর চেয়ারপারসন ও ট্রাস্টি ডা. তাসবিরুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের সম্মেলন বাংলাদেশ কেন দক্ষিণ এশিয়াতেও হয়নি। আমাদের এই কনফারেন্সের আগে ঢাকার বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে ১৬ টা কোর্স করিয়েছি। আমার ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসব কোর্স করিয়েছি। ২৬ এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি আবার সামিট পরবর্তী দুই দিনের কোর্স করানো হবে। আপনারা দেখবেন আজ এক রুমে কথা বলছেন অনকোলজিস্ট, এক রুমে কার্ডিওলোজিস্ট, এক রুমে সার্জারি, এক রুমে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গাইডেন্স নিয়ে কথা বলছে। এ রকম একটা কনফারেন্স ওয়ার্ড হয়েছে কি না আমি চেক করবো।
পিএইচএ ট্রাস্টি ডা. নাসের খান বলেন, আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক নামকরা প্রফেসর যুক্ত আছেন। তাদের পরামর্শ নিয়েই আমরা প্রতিটা পদক্ষেপ নেই। হেলথ কেয়ারে যারা যুক্ত আছেন নার্স-টেকনিশিয়ান বা যেকোনো পর্যায়ের… তাদের ট্রেনিং, তাদের জ্ঞান আমরা অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। আমরা শুধু বিদেশি নলেজে এ দেশে নিয়ে আসব তা নয়, বাংলাদেশি ডাক্তারদের অগ্রগতিও আমরা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে চাই।
পিএইচএ ট্রাস্টি ডা. শাকিল ফরিদ বলেন, দেশের সবগুলো সোসাইটি, কলেজ অব ফিজিসিয়ানস… এ ধরনের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আমরা কাজ করছি। তা না হলে আমরা সাকসেসফুল হতে পারতাম না। এই সামিট স্টুডেন্টদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ তারা একটা প্লাটফর্মের সঙ্গে পরিচিত হতে পারছে, বড় বড় ডাক্তারদের সানিধ্যে আসতে পারছে। এটা তাদের ক্যারিয়ারের জন্য খুবই উপকারী।
পিএইচএ ট্রাস্টি ওমর শরীফ বলেন, সকল স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় আমরা পিএইচএকে সাউথ এশিয়াতে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
প্রসঙ্গত, এই প্রথমবারের দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিএইচএ গ্লোবাল সামিট ২০২৪। এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুধু বাংলাদেশে নয়; দক্ষিণ এশিয়ায় এই প্রথম। নয় দিনের এই সম্মেলনে দুই হাজারের অধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও মেডিকেল শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। রোববার (২৫ ডিসেম্বর) এই সামিটের সপ্তম দিন এবং দুই দিনের মূল পর্বের সমাপনী দিন। মূল পর্বের সমাপনী পরবর্তী আরও দুই দিনে তিনটি সেশন অনুষ্ঠিত হবে।