সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪

পুঁজিবাজারের ১৫ লাখ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে এনে চার বছরে তা ৫০ লাখে উন্নীত করাই মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ১৫ লাখ বিনিয়োগকারী আছে কিন্তু সবাই সক্রিয় নয়, তাদের আস্থা ফিরিয়ে এনে সক্রিয় করতে হবে। কীভাবে আগামী চার বছরে মোট ৫০ লাখ বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজারে আনা যায় তা ভাবতে হবে। একইসঙ্গে অতীতের ভুলগুলো শোধরাতেও কাজ করতে হবে।

সোমবার (১৯ আগস্ট ) বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে যোগদানের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এসব কথা বলেন। এর আগে, সকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ে যোগদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে বিএসইসিতে যান তিনি। সেখানে বিএসইসি ও বিএসইসির অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এর আগে, গতকাল রবিবার (১৮ আগস্ট) আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) উপ-সচিব ফরিদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ এর ধারা ৫ ও ৬ বিধান প্রতিপালন ও উক্ত আইনের ধারা ৫(২) অনুসারে তাকে আগামী চার বছরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হইলো।

এতে আরও বলা হয়, খন্দকার রাশেদ মাকসুদের তিন দশকের ও বেশি সময় ধরে দেশে-বিদেশে ব্যাংকখাতে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক ব্যাংক সিটি ব্যাংক এনএ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ২০১১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর পূর্বে তিনি সিটি ব্যাংক এনএ ইন্দোনেশিয়াতে ২০০৮-২০১০ সময়কালে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি তিনি বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনে (আইএফসি) স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে ফিন্যান্সে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি আরো তরান্বিত হবে এবং বিনিয়োগকারীরা একটি স্বচ্ছ, গতিশীল ও উন্নত পুঁজিবাজার পাবেন বলে আশা করা যায়।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার (১১ আগস্ট) বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম পদত্যাগ করেন। এর এক দিন পর সোমবার (১২ আগস্ট) পদত্যাগ করেন সংস্থাটির দুজন কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও ড. রুমানা ইসলাম। চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের পদত্যাগের পর পুঁজিবাজার অনেকটা নেতৃত্বহীন অবস্থায় চলছিল। অভিভাবকহীন এ অবস্থা থেকে দেশের পুঁজিবাজারের হাল ধরতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সার্বিক দিক বিবেচনা করে গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) মাশরুর রিয়াজকে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয়। তবে মাসরুর রিয়াজের যোগ্যতা ও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিএসইসি‘র অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। পরবর্তীতে ভুল বুঝতে পেরে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মাসরুর রিয়াজকে বিএসইসিতে যোগদানের জন্য স্বাগত জানানো হয়। কিন্তু, মাসরুর রিয়াজ বিএসইসিতে যোগদান করতে অপারগতা প্রকাশ করে গত শনিবার (১৭ আগস্ট) বিবৃতি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে নিয়োগ দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *