সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩৫ বছর এবং অবসরের বয়স ৬৫ বছর করার দাবি জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দিয়েছে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের পক্ষ থেকে চিঠিটি পাঠানো হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে।

চিঠিতে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়স এর আগে যথাক্রমে ৩০ ও ৫৯ (মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের যথাক্রমে ৩২ ও ৬০) বছর করা হয়েছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমান ৭২ দশমিক ৩ বছরে দাঁড়িয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের চাকরির অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৭ বছর। বিগত এবং বর্তমান সময়ে যেসব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকের বয়স ৬৭ বছরের ঊর্ধ্বে।

অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানদণ্ড পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, বিশ্বের ১৬২টি দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে আবার এটি উন্মুক্ত। একই সঙ্গে অবসরের বয়সসীমা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট ভেদে ৬৫ থেকে ৬৭ বছর এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭২ বছর। সরকারি চাকরিতে প্রবেশ এবং অবসরের যাওয়ার বয়স বৃদ্ধির বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে চাকরিপ্রত্যাশী এবং চাকরিরতদের পক্ষে আন্দোলন ও দাবি উত্থাপিত হয়েছে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের যাঁতাকলে পড়ে বিভিন্নভাবে নিপীড়িত, বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার হয়ে সৎ, যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তা সময় মতো পদোন্নতি ও উপযুক্ত পদে পদায়ন না হওয়ায় সরকারি কাজে তারা তাদের প্রকৃত মেধা ও যোগ্যতার সাক্ষর রাখতে সক্ষম হননি। স্বৈরাচারী কায়দায় দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়ায় মেধাবী যুবসমাজকে কোটার আবরণে বঞ্চিত করাসহ কোনো কোনো ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কিংবা রাজাকারের সন্তান, ভিন্নমতাবলম্বী তকমা দিয়ে বিভিন্ন অপকৌশলে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করায় বৈষম্যহীন, মেধাভিত্তিক ও যোগ্যতাভিত্তিক নিরপেক্ষ প্রশাসন গড়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে সেই চিঠির সূত্র উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে অনুরোধ করে আরেকটি চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব মো. সাজ্জাদুল হাসান তাতে স্বাক্ষর করেছেন।

এ প্রসঙ্গে সাজ্জাদুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আসা অনুরোধ পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য পাঠানো হয়েছে। এটি কোনো সিদ্ধান্ত বা আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম নয়। কেবল আবেদনটি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ বলেন, তাদের আগের একটি বৈঠকে চাকরির বয়সসীমার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছিল। তার আলোকেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এটি নিয়ে এখনো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত আছে বলে জানান এই অতিরিক্ত সচিব।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *