প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। বঙ্গবন্ধু পররাষ্ট্রনীতি সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা সেই নীতিতে বিশ্বাস করি। কিন্তু যদি কখনও বহিঃশত্রুর আক্রমণ হয়, সেটা যেন আমরা মোকাবিলা করতে পারি তার উপযুক্ত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা পৌনে ১১টার পর চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিজয়ের ইতিহাস কলঙ্কিত হয়। জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতার আদর্শ খর্ব করা হয়। জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা এ দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তাদের ক্ষমতায় বসানো হয়।
করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, করোনা মহামারি থেকে আমরা সফলভাবে বের হয়ে আসতে পেরেছি। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। উন্নত দেশগুলোও মন্দার কবলে পড়েছে।
বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার ধাক্কা বাংলাদেশে যেন না আসে সেজন্য সবাইকে খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মাটি অনেক উর্বর। মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করেছিলেন আপনাদের তো কিছুই নেই, কীভাবে দেশকে গড়ে তুলবেন। তিনি বলেছিলেন, আমার মাটি আছে, মানুষ আছে। আমি মাটি ও মানুষ দিয়ে বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আমি সেই কথা বিশ্বাস করি। আমি চাই প্রত্যেকটা নাগরিক যে যা পারেন উৎপাদন করেন। বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার ধাক্কা যেন বাংলাদেশে না আসে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্যারেডে অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান গতকাল চট্টগ্রাম সেনানিবাসে শুরু হয়। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৩ এবং দশম টাইগার্স পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন এবং রেজিমেন্টের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য, দেশমাতৃকার সেবায় অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গৌরবময় অতীতের মতো সদা প্রস্তুত থাকতে সব সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান সেনাপ্রধান।
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলনে সেনাপ্রধানের উপস্থিতিতে এ কোরের সদস্যদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি এবং আগামী দিনে দেশসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করা হয়।