নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে তীব্র যানজটের মধ্যে বিএনপিসহ কতিপয় বিরোধী দলের ‘হরতাল’ পালিত হচ্ছে। সকাল থেকেই নগরীর প্রতিটি সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। এ প্রতিবেদক আজ সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত নগরীর আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, কদমতলী, দেওয়ানহাট, টাইগারপাস, জুবিলি রোড, রিয়াজউদ্দিন বাজার, নিউমার্কেট, স্টেশন রোড, টাইগারপাস, লালখানবাজার, ওয়াসা মোড়, জিইসি, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, বাকলিয়া এক্সেস রোড, কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকা পরিদর্শনে গেলে প্রতিটি সড়কে তীব্র যানজট প্রত্যক্ষ করেন।
সব ধরণের শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমাসহ সরকারি-বেসরকারি অফিস নির্ধারিত সময়েই খোলা হয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পিকেটিং তো দূরে থাক, হরতালের সমর্থনে কোথাও কাউকে হালকা স্বরে স্লোগান দিতেও দেখা বা জানা যায়নি। নগরীতে বিজিবি বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। এমনকি সাম্প্রতিক ‘হরতাল-অবরোধে’ নগর আওয়ামী লীগ ১৯ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও আজ এ পথ পরিক্রমায় কোথাও কোনো সমাবেশ চোখে পড়েনি।
জানা গেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন হওয়ায় দলের নেতাকর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশে প্রাথীদের বাড়ি বা নির্বাচনী অফিসে জমায়েত হয়ে তাদের সমর্থন জানানো এবং নির্বাচনী কার্যকলাপ সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। ফলে বিভিন্ন স্থানে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ হচ্ছে না।
বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে সপ্তাহের বৃহস্পতিবার অন্য পাঁচদিনের তুলনায় রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি থাকে। আজও এ চিত্রই নগরীর সর্বত্র বিরাজমান। এমনকি কয়েকটি স্থানে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে যানজট সামলাতে হচ্ছে। জিইসি-ওয়াসার মধ্যবর্তী অংশে আজ অন্যদিনের চেয়ে ৩ জন ট্রাফিক পুলিশ বেশি ছিল। তবু এ পথটুকু পাড়ি দিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লেগে যায়।
‘হরতাল’-এর এ চিত্রে সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি নেমে এসেছে। কেউ কেউ ভেবেছিলেন, নির্বাচন হতে না দেয়ার বিএনপির ঘোষণা থাকায় মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষদিনে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে হরতাল ডেকে বিএনপি-জামায়াত নাশকতা করে নগরীকে অস্থির করে তুলতে পারে। তাদের কর্মসূচি সফল করতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা রাস্তায় ঝাঁপিয়ে পড়বেন প্রার্থীরা যাতে স্ব স্ব রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে মানোনয়নপত্র জমা দিতে না পারেন। কিন্তু নিরেট বাস্তবতা হলো, নগর, থানা বা ওয়ার্ড পর্যায়ের কোনো নেতাকর্মীর টিকিটিও দেখা যায়নি কোথাও।
বিরোধী দলের কর্মসূচির এ দৈন্য দশা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাউথইস্ট ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার সিনিয়র ভাইস- প্রেসিডেন্ট রাশেদুল আমিন জানান, ‘একজন ব্যাংকার হিসেবে রাজনৈতিক কর্মসূচি সম্পর্কে ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো মন্তব্য করা সমীচিন নয়। তবে আজ নির্ধারিত সময়েই আমাদের ব্যাংক খোলা হয়েছে। গ্রাহকরা স্বাভাবিক সময়ের মতোই ব্যাংকে ভিড় করছেন এবং যথারীতি লেনদেন হচ্ছে। আমি নিজের গাড়িতে করেই ব্যাংকে এসেছি এবং রাস্তায়ও বিপুল সংখ্যক যানবাহন চোখে পড়েছে।’ খবর বাসস।