চলছে পবিত্র রমজান মাস। এই মাসে আমাদের সবারই আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকে মজাদার ও ভিন্ন ধরনের ইফতার। সারা দিন রোজা রাখার পর আমাদের ইফতারির আয়োজনে থাকে নানা পদের খাবার। বাইরের দোকানগুলোতে ইফতারে যেসব খাবার পাওয়া যায়, তার গুণগত মান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই ঘরে তৈরি ইফতারের মজাদার কিছু রেসিপি রোজাদারদের সুস্থ থাকার প্রধান অবলম্বন হতে পারে।
চলুন জেনে নিই ইফতারের জন্য পুষ্টিকর কিছু খাবারের রেসিপি—
খেজুরের শরবত
উপকরণ:
নরম খেজুর আধাকাপ, ঘন দুধ ১ কাপ, চিনি পরিমাণমতো, কিশমিশ ১ চা চামচ, বাদাম কুচি ১ চা চামচ এবং পানি পরিমাণমতো।
প্রস্তুত প্রণালি:
প্রথমে খেজুর ভালো করে ধুয়ে নিন। এর পর খেজুরের বিচি ফেলে টুকরা করে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।
এভাবে কম সময়ে ও সহজে যে কেউ চাইলেই এই ইফতার আইটেমগুলো প্রস্তুত করতে পারেন। প্রতিটা রেসিপি বিকালের নাস্তা হিসেবেও খাওয়া যাবে। পরিবারের সবার পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি তাদের স্বাদকেও বাড়িয়ে তুলুন।
চিকেন সালাদ
চিকেন সালাদ অনেকেই পছন্দ করেন। আর তাই রোজাতে ইফতারের সময় পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় অনেকেই চিকেন সালাদ রাখেন।
উপকরণ:
হাড় ছাড়া মুরগির মাংস ১ কাপ, ময়দা ২ টেবিল চামচ, ওনিয়ন পাউডার ১ চা চামচ (বাটা পেঁয়াজ দিয়েও করতে পারেন), গারলিক পাউডার ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া হাফ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, অল্প টমেটো সস ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ১ টেবিল চামচ।
সালাদের জন্য যা লাগবে:
শসা, গাজর, টমেটো, লেটুস কুচি এবং ভাঁজা মচমচে নুডুলস, লেবুর রস, অল্প অলিভ ওয়েল।
প্রস্তুত প্রণালি:
তেলছাড়া মাংসের সব উপকরণ মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে মেরিনেট করে রাখুন ১০ মিনিট। এক ঘণ্টা হলে আরও ভালো। প্রথমে প্যানে তেল দিয়ে তেল গরম হলে মেরিনেট করে রাখা মাংস দিয়ে মিডিয়াম আঁচে রান্না করুন। ভাজা ভাজা হলে নামিয়ে নিন।
এখন সালাদের জন্য কেটে রাখা শসা, গাজর, টমেটো, লেটুস কুচিতে অল্প লবণ, ভাজা মচমচে নুডুলস, লেবুর রস আর অল্প অলিভ ওয়েল দিয়ে মেখে নিন (লবণটা খেয়াল রাখতে হবে কারণ রান্না করা মাংসতেও লবণ দেওয়া আছে)।
প্লেটে পরিবেশনের সময় আগে মাখানো সালাদ সাজিয়ে নিন। এর ওপর রান্না করা মাংস ছড়িয়ে দিন। চাইলে কিছু ভাজা বাদাম ওপরে ছিটিয়ে পরিবেশন করতে পারেন। এতে পরিবেশনটা দেখতেও ভালো লাগবে।
সাধারণ ছোলা পেঁয়াজুকেই করে তুলুন স্বাদে অনন্য
উপকরণ:
ছোলা ২ কাপ, আলু ১টা কিউব করে কাটা, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা আধা চা চামচ, জিরা বাটা আধা চা চামচ, ধনে বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, কাঁচামরিচ ৫-৬টি, লবণ পরিমাণমতো, তেল ৩ টেবিল চামচ, তেজপাতা ২টি, দারচিনি ২ টুকরা, এলাচ ২টি, আস্ত জিরা সামান্য।
প্রস্তুত প্রণালি:
ছোলা ৫-৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে সিদ্ধ করতে হবে। তেল গরম করে আস্ত জিরা দিয়ে পেঁয়াজ কুচি বাদামি করে ভাজতে হবে। এর পর আলু এবং সব বাটা ও গুঁড়া মসলা কষিয়ে ছোলা দিয়ে ভুনতে হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি উপকরণ দিয়ে কষিয়ে অল্প পানি দিয়ে রান্না করতে হবে। ছোলার ওপর তেল এলে আগুনের আঁচ কমাতে হবে। এর পর কাঁচামরিচ দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে।
ডিম চপ
ইফতারিতে আমাদের অনেকেরই প্রিয় ডিম চপ। বিশেষ করে শিশুরা তো দারুণ পছন্দ করে এই খাবারটি। কিন্তু অনেকেই জানেন না কীভাবে ডিম দিয়ে চপ তৈরি করতে হয়। যারা ডিম চপের সব থেকে সহজ রেসিপি জানেন না, তাদের জন্য আজ রইল ডিম চপ তৈরির সবচেয়ে সহজ রেসিপি তৈরির পদ্ধতি।
উপকরণ:
ডিম সিদ্ধ ৪টি, আলু সিদ্ধ আধা কেজি পরিমাণ, পেঁয়াজ কুচি ২টি, কাঁচা মরিচ কুচি স্বাদমতো, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, ধনিয়া পাতা ৩ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, ব্রেড ক্রাম ও বিস্কুটের গুঁড়া ১ কাপ, ফেটানো ডিম ২টি, তেল পরিমাণমতো।
প্রস্তুত প্রণালি:
ডিম সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে রাখুন। আলু ধুয়ে সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে নিন।
সিদ্ধ আলুর সঙ্গে পেঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ কুচি, ধনিয়া পাতা কুচি, গোল মরিচের গুঁড়া ও লবণ দিয়ে খুব ভালো করে মেখে নিন। এবার আলুর মিশ্রণের ভেতর আস্ত সিদ্ধ ডিম ভরে চপের আকৃতিতে গড়ে নিন।
২টি ডিম একটু লবণ দিয়ে ফেটিয়ে নিন। চপগুলো ডিমের গোলায় ডুবিয়ে ব্রেড ক্রামে জড়িয়ে কিছু সময়ের জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। চাইলে ব্রেড ক্রামের সঙ্গে চিজ কুচিও মিশিয়ে দিতে পারেন। এতে স্বাদ আরও বেড়ে যাবে।
এবার ফ্রিজ থেকে চপগুলো বের করে ডুবো তেলে ভেজে তুলুন। যাতে করে বাদামি রঙ আসে। হয়ে গেলে ইফতারির টেবিলে গরম গরম পরিবেশন করুন দারুণ মজাদার ডিম চপ।