দিন দিন ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাচ্ছে গাজায়। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে শহরটি। জ্বালানির অভাবে সেখানে হাসপাতালগুলোতে মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে। সেখানের হাসপাতালগুলো এতদিন হতাহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি মানুষের আশ্রয়ের জায়গা ছিল। কিন্তু সেই আশার আলোও এখন নিভে যেতে শুরু করেছে।
অব্যাহত ইসরায়েলি হামলা ও জ্বালানি সরবরাহ না থাকায় এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ৪০টি হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক লাইভ আপডেট প্রোগ্রামে এ তথ্য জানায়। মূলত, হাসপাতালগুলো তাদের কার্যক্রম স্থগিত করে দিয়েছে। জ্বালানি সরবরাহ না থাকায় এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছিল সেখানকার হাসপাতালগুলোর ইলেক্ট্রিক জেনারেটর আর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা চালু থাকতে পারবে। এই সময়ের মধ্যে জ্বালানির ব্যবস্থা করা না গেলে জেনারেটরও বন্ধ হয়ে যাবে। সতর্কবার্তার ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত জ্বালানির ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।
উত্তর গাজার বৃহত্তম বেসরকারি ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল জানায়, তাদের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের (আইসিইউ) মতো শেষ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলো ছাড়া সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
উত্তর গাজার সর্বশেষ রোগীদের সেবা দিচ্ছিল বেইট হানুন হাসপাতাল। তীব্র ইসরায়েলি বোমা হামলার কারণে সেটিরও অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
হাসপাতালটির পরিচালক আতেফ আল-কাহলুত বলেন, যদি হাসপাতাল জ্বালানি না পায়, তাহলে এটি উত্তর গাজার রোগীদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড হতে চলেছে।
মঙ্গলবার পর্যন্ত কয়েকটি হাসপাতালে জ্বালানি ছিল। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে ফুরিয়েছে এ শক্তি। হাসপাতালগুলোর ইলেকট্রিক জেনারেটর চলতে চলতে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকরা আগে থেকেই বলছিলেন, সঠিক সময়ের মধ্যে জ্বালানির ব্যবস্থা করা না গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরো মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকালে টেলিগ্রামে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। অথচ গাজায় খুবই ধীর গতিতে মানবিক সহায়তা আসছে এবং এটা প্রকৃত অবস্থার কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না।