সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তা বুধবার গাজা উপত্যাকার অবশিষ্ট হাসপাতালের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন। এসব হাসপাতালে রোগীরা স্টাফ এবং সরবরাহের চরম অভাবের কারণে ‘মৃত্যুর অপেক্ষায় আছে’।

জরুরী চিকিৎসা দলের সমন্বয়কারী শন ক্যাসে বলেছেন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে তিনি প্রায় পাঁচ সপ্তাহ অবস্থান করে হাসপাতালের রোগীদের দেখেছেন চিকিৎসার জন্য ‘প্রতিদিন গুরুতর পোড়া, ভেঙ্গে যাওয়া উন্মুক্ত অঙ্গসহ তারা কয়েক ঘন্টা বা দিনের পর দিন অপেক্ষা করছে।’

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে সাংবাদিকদের ক্যাসে বলেন, ‘তারা প্রায়ই আমার কাছে খাবার বা পানির জন্য জিজ্ঞাসা করত। আমরা যে হতাশার মাত্রা দেখি এতে তা বোঝা যায়।’

তিনি বলেছেন, গাজার ১৬টি কার্যকরী হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ছয়টি তিনি পরিদর্শন করতে সক্ষম হয়েছেন। যুদ্ধ শুরুর আগে গাজায় ৩৬টি হাসপাতাল কার্যকর ছিল।
শন ক্যাসে বলেন, ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবনতির পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগতভাবে যা দেখেছি তা হ’ল মানবিক সহায়তার ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিশেষকরে গাজা উপত্যাকার উত্তরের অঞ্চলে মানবিক সহায়তার সুযোগ প্রায় সম্পূর্ণ হ্রাস করা হয়েছে।’

তিনি গাজার উত্তরের হাসপাতালে রোগীদের অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন যারা ‘মূলত এমন একটি হাসপাতালে মৃত্যুর অপেক্ষায় রয়েছেন। সেখানে জ্বালানি, বিদ্যুৎ, পানি কিছুই নেই।’

‘সাত দিনের পরিদর্শন কালে প্রতিদিন আমরা উত্তরে গাজা সিটিতে জ্বালানি এবং সরবরাহ পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি’ এ কথা উল্লেখ করে ক্যাসে বলেন, ‘প্রতিদিনই আমাদের অনুরোধ প্রত্যাখান করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ন্যূনতম কর্মীদের নিয়ে কাজ করার সময় হাসপাতালগুলো বিপুল রোগীদের সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে। কর্মীদের মধ্যে অনেকেই গাজার জনসংখ্যার বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠের মতো বাস্তুচ্যুত।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ এবং স্থল হামলায় কমপক্ষে ২৪,৪৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী, ছোট শিশু এবং কিশোর-কিশোরী রয়েছে।

‘হু’ প্রধান টেড্রোস আধানম গ্রেব্রিয়াসিসের আহ্বানের প্রতিধ্বনি করে ক্যাসে বলেছেন, গাজার সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন ‘সত্যিকারের যুদ্ধবিরতি।’

ক্যাসে বলেছেন, গাজার দক্ষিণে তিনি নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন, যেখানে ‘তাদের মাত্র ৩০ শতাংশ কর্মী আছে এবং তাদের শয্যার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগীদের সংখ্যা প্রায় ২শ’ শতাংশ বেড়েছে। এতে হাসপাতালের মেঝে, করিডোর সর্বত্র রোগীদের উপচে পড়া ভীড়।’

তিনি বলেন, ‘আমি বার্ন ইউনিটে গিয়েছিলাম, যেখানে একজন চিকিৎসক ১শ’ রোগীর যত্ন নিচ্ছেন।’

ক্যাসে বলেন, ‘দিন দিন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পতন’ ছাড়াও ‘প্রতিদিন যে মানবিক বিপর্যয় উদ্ঘাটিত হচ্ছে তা আরও খারাপ হচ্ছে।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *