সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা দেড় মাস ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১২ হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার স্কুল, মসজিদ এমনকি হাসপাতালের মতো স্থাপনাও।

এই পরিস্থিতিতে গাজা ভূখণ্ডের বৃহত্তম চিকিৎসাকেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালকে ‘ডেথ জোন’ বলে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। একইসঙ্গে হাসপাতালটিতে এখনও যারা অবস্থান করছেন তাদের সরিয়ে নিতেও অনুরোধ করেছে সংস্থাটি।

রোববার (১৯ নভেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজার আল-শিফা হাসপাতালকে ‘ডেথ জোন’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একইসঙ্গে হাসপাতালে অবস্থানরত অবশিষ্ট লোকদের সরিয়ে নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি।

এর আগে আল-শিফা হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এরপর ইসরায়েলি বাহিনী এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতাল থেকে রোগীদের চলে যাওয়ার আল্টিমেটাম দেয়। পরে সেটি প্রায় জনমানবহীন হয়ে পড়ে।

এরপর শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বে মানবিক পরিস্থিতি মূল্যায়নকারী একটি দল হাসপাতালটি পরিদর্শন করে। পরে তারাই গাজা ভূখণ্ডের বৃহত্তম এই হাসপাতালটিকে ‘ডেথ জোন’ বলে আখ্যা দেয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, মানবিক পরিস্থিতি মূল্যায়নকারী ওই দলটি আল-শিফা হাসপাতালের প্রবেশপথে গণকবর দেখেছে এবং সেখানে ৮০ জনেরও বেশি লোককে কবর দেওয়া হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, লজিস্টিক অফিসার এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন বিভাগের নিরাপত্তা কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত ওই দলটি হাসপাতালে গোলাবর্ষণ ও গোলাগুলির দৃশ্যমান নানা লক্ষণও দেখতে পায় বলে জানানো হয়েছে।

ডব্লিউএইচও বলেছে, ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত সময়সীমার কারণে দলটি হাসপাতালের ভেতরে মাত্র এক ঘণ্টা অবস্থান করতে সক্ষম হয় এবং এই ঘণ্টার পরিদর্শনেই তারা এই হাসপাতালকে ‘ডেথ জোন’ বা ‘মৃত্যু অঞ্চল’ বলে আখ্যা দেন এবং হাসপাতালের পরিস্থিতিকে ‘মরিয়া’ হিসাবে বর্ণনা করেন।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি, ওষুধ, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তার অভাব এই চিকিৎসাকেন্দ্রটি ‘হাসপাতাল হিসাবে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে’।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে কর্মীদের পক্ষে হাসপাতালে কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। করিডোর এবং হাসপাতালের মাঠ চিকিৎসাসহ অন্যান্য বর্জ্যে ভরে গেছে, যা এখানে অবস্থানরতদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।’

এতে বলা হয়েছে, ‘হাসপাতালে অবস্থারনত রোগী এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা নিজেদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের বিষয়ে আতঙ্কে রয়েছেন এবং তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। আল-শিফা হাসপাতাল নতুন করে আর কোনও রোগীকে ভর্তি করতে পারছে না এবং আহত ও অসুস্থদের ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে যেতে বলা হচ্ছে।’

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী আল-শিফা হাসপাতাল থেকে সবাইকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর হাসপাতালটিতে এখনও ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৩২ শিশুসহ ২৯১ জন রোগী রয়েছেন বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *