

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরায়েল। দেশটির বর্বর আগ্রাসনে গত ২৪ ঘণ্টায় ভূখণ্ডটিতে ২৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি মানুষ।
ইসরায়েলি এই হামলায় বহু পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল তার হামলা জোরদার করার সঙ্গে সঙ্গে অঞ্চলটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এর মধ্যে মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ১০০ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
সোমবার মধ্য গাজা উপত্যকার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে এক নারী বলেছেন, ‘আমার পুরো পরিবার চলে গেছে। আমার পাঁচ ভাইয়ের সবাই চলে গেছে। তারা আমার কোনও ভাইকেই ছাড়েনি। … তাদের সবাই মারা গেছেন!’
ফিলিস্তিনিরা সোমবার ইসরায়েলি হামলায় নিহত ব্যক্তিদের কাফনে জড়ানো মৃতদেহ স্পর্শ করার জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিল। নিহত এসব মানুষের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু ছিল। গাজায় আল জাজিরার একজন প্রতিবেদক বলেছেন, মাগাজি শরণার্থী শিবিরে নিহতের সংখ্যা এখন ১০০ ছাড়িয়েছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, মাগাজি ক্যাম্পের একটি আবাসিক চত্বরে ইসরায়েলি হামলায় সাতটি পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। মাগাজির বাসিন্দা জেয়াদ আওয়াদ আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বেসামরিক মানুষকে রেহাই দিচ্ছে না। আমার সন্তান আমাকে বলল, ‘আমাকে সাহায্য কর! কি হচ্ছে? আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’
ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান লড়াইয়ের মধ্যে গাজায় ক্রিসমাসের আগের রাতে সবচেয়ে তীব্র বোমা হামলা করা হয়। ইসরায়েলি এই হামলায় বহু ভবন মাটিতে মিশে যায় এবং বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের স্তূপের নিচে আটকে পড়েন।
আল জাজিরার সংবাদদাতা হিন্দ খুদারি মাগাজি থেকে বলেছেন, ‘হামলায় একটি তিনতলা বিল্ডিংকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল এবং আশপাশের আরও কয়েকটি বাড়ি ও ভবনকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এক পরিবারের পাঁচজন সদস্য এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছেন। আটকে পড়াদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘মানুষ বলছে- গতকাল থেকে কোনও অ্যাম্বুলেন্স বা সিভিল ডিফেন্স সেখানে নেই এবং তারা এটি সম্পর্কে কিছুই করতে পারবেন না। অনেকে তাদের নিজের খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ খনন করার চেষ্টা করছেন।’
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি হামলায় খান ইউনিস, বুরেইজ এবং নুসেইরাতের মতো এলাকায়ও বহু মানুষ নিহত হয়েছে। গত দিনে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৫০০ মানুষ আহত হয়েছেন।
দক্ষিণ গাজার রাফাহ থেকে আল জাজিরার তারেক আবু আজউম বলেছেন, মাগাজিতে হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৬ হয়েছে।