ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের ‘বেআইনি’ হামলা নিয়ে আলোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। রোববার (২৬ নভেম্বর) এক ফোনালাপে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ফোন কলে তুরস্ক ও ইরানের প্রেসিডেন্ট গাজায় ইসরায়েলের ‘বেআইনি’ হামলা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে তুর্কি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
দেশটির যোগাযোগ অধিদপ্তরের দেওয়া এক বিবৃতি অনুসারে, রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এবং ইব্রাহিম রাইসি ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা বিতরণের পাশাপাশি এই অঞ্চলে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে মতবিনিময় করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মুসলিম বিশ্বের, বিশেষ করে তুরস্ক ও ইরানের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আঙ্কারা ও তেহরান স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং স্থায়ী শান্তি অর্জনের জন্য একসঙ্গে কাজ করে যাবে।
এছাড়া ফোনালাপে উভয় প্রেসিডেন্ট তুরস্কে অনুষ্ঠিতব্য তুরস্ক-ইরান উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা পরিষদের প্রস্তুতি ও এজেন্ডা নিয়েও মতবিনিময় করেন।
কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত শুক্রবার থেকে গাজায় চার দিনের মানবিক বিরতি চলছে। এতে করে সাময়িকভাবে ফিলিস্তিনের এই অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধ রয়েছে। মানবিক বিরতির প্রথম দুই দিনে ইসরায়েল তার কারাগারে থাকা ৭৮ ফিলিস্তিনিকে এবং হামাসের হাতে বন্দি থাকা ৪১ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে।
এছাড়া যুদ্ধবিরতির চুক্তির অংশ হিসেবে রোববার তৃতীয় দফায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগে তৃতীয় ব্যাচে ১৩ ইসরায়েলিসহ আরও ১৭ বন্দির মুক্তি দেয় হামাস।
উল্লেখ্য, দেড় মাসেরও বেশি সময় যুদ্ধ চলার পর গত শুক্রবার চারদিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছায় হামাস ও ইসরায়েল। এ চুক্তি অনুযায়ী, হামাস ৫০ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে। অপরদিকে ইসরায়েল তাদের কারাগার থেকে ১৫০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। সোমবার এই চুক্তির শেষ দিন।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি বর্বর সেই হামলায় নিহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮৫৪ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই ৬ হাজারের বেশি।
এছাড়া হামলায় নিহতদের মধ্যে চার হাজারেরও বেশি নারী রয়েছেন। ইসরায়েল হুমকি দিয়ে আসছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হলেই তারা আবারও গাজায় হামলা চালানো শুরু করবে। তবে কাতারসহ অন্যান্য দেশগুলো বলছে, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হবে।