

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৪৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৩ হাজার ১৩৭ জনে।
এছাড়া গত অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭৬ হাজার ফিলিস্তিনি। শনিবার (৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের বর্বর হামলায় অন্তত আরও ৪৬ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৬৫ জন আহত হয়েছেন বলে শনিবার ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি দখলদার (বাহিনী) গাজা উপত্যকায় পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে চারটি গণহত্যা চালিয়েছে, যার ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ জন শহীদ ও আরও ৬৫ জন আহত হয়েছেন।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন এবং উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।’
আনাদোলু বলছে, আন্তর্জাতিক আদালতের অস্থায়ী রায়কে উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর চলা নিরলস এই হামলায় কমপক্ষে ৩৩ হাজার ১৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৫ হাজার ৮১৫ জন আহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। চলতি বছরের জানুয়ারিতে অন্তর্বর্তীকালীন এক রায়ে আদালত তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।