সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ঠেকাতে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা পালনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে পুরোদমে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ জন্য নির্বাচনের আগেই দলের গৃহদাহ মিটিয়ে ফেলার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

গতকাল বুধবার গণভবনে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। এই বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং ঢাকা-১৭ আসনের এমপি মোহাম্মদ আলী আরাফাত বক্তব্য রাখেন। এ বৈঠকে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গও আলোচনা হয়েছে।

রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে অংশ নেওয়া কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতাকর্মীর করণীয় নিয়ে আলোচনার জন্য ডাকা বৈঠকে তথ্য সন্ত্রাস ও গুজবের বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, আগে পোস্টার-ফেস্টুনের মাধ্যমে প্রচার চালানো হতো। এখন সেই অবস্থা নেই। বাস্তবতা ও পারিপার্শ্বিকতার কারণে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। রাজনীতি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও স্থান পেয়েছে।

আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। অথচ দুর্ভাগ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেই একের পর এক মিথ্যাচার এবং অপপ্রচার করা হচ্ছে। এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। শক্তভাবে সব ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।

সরকারবিরোধী আন্দোলনের দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করা হবে। তবে কথিত সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই আন্দোলনেরও কোনো সুযোগ নেই। আর আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তির ওপর ভর করে আছে। জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গেই রয়েছে। তাই আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিজয় হবে।

প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রতি নির্দেশ দেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। সুতরাং আরও সজাগ এবং সক্রিয় থাকতে হবে। সব ধরনের ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যিনিই মনোনয়ন পাবেন, তার পক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বর্তমান সরকারের আমলে বাস্তবায়ন হওয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ জনগণের সামনে তুলে ধরার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেছেন, আগের মতো শুধু ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইলেই হবে না। ভোটারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থেকে নির্বাচনী প্রচার চালাতে হবে। মোহাম্মদ আলী আরাফাত প্রতিদিন কম করে হলেও আধাঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকার জন্য নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ফেসবুক এবং ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থেকে শেয়ার, লাইক ও কমেন্ট করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই বৈঠক চলাকালে তাঁর মেজো বোন ফেরদৌস আরার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে চলে যান। বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর উপস্থিত ছিলেন।

সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কৃষক লীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি ও সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা, জাতীয় শ্রমিক লীগ সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক কে এম আজম খসরু, মহিলা শ্রমিক লীগ সভাপতি সুরাইয়া আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার সাথী, যুব মহিলা লীগ সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজী ও সাধারণ সম্পাদক শারমীন সুলতানা লিলি।

 

 

সূত্র – সমকাল

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *