নভেম্বর ২৮, ২০২৪

অর্থনীতি ও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য ড. আতিউর রহমানকে ‘আহ্ছানউল্লাহ স্বর্ণপদক ২০২১’ দিচ্ছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন। ১৯৫১ সালের ৩ আগস্ট জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করা গুণী এ অর্থনীতিবিদ পুরস্কার হিসেবে পাবেন দুই ভরি পরিমাণ স্বর্ণের অর্থমূল্য, দুইলাখ টাকা, মনোগ্রাম-সংবলিত একটি ক্রেস্ট ও একটি সনদ।

ড. আতিউরকে ঐতিহ্যবাহী এই বিশেষ সম্মাননা দেয়ায় আহছানিয়া মিশন কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে তার প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয়। ড. আতিউর নিজেও এই বিরল সম্মাননা পেয়ে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

সাবেক এ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ অন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বিআইডিএস-এর সিনিয়র ফেলো হিসেবেও কাজ করছেন। বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ কাউন্সিল এবং বঙ্গবন্ধু এগ্রিকালচার অ্যাওয়ার্ড ট্রাস্ট-এর গভর্নিং বডিরও তিনি সম্মানিত সদস্য। টোকিওভিত্তিক সামাজিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সোশ্যাল ইনোভেশন জাপান (এসআইজেড)-এর বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সামাজিক গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে অবদান রেখে চলেছেন। একই সঙ্গে দেশে রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের নির্বাহী সভাপতি এবং ছায়ানট-এর সহ-সভাপতি হিসেবে সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চায় অবদান রেখে চলেছেন ড. আতিউর।

২০০৯ থেকে প্রায় সাত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দেশে আর্থিক সেবা খাতের নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. আতিউর রহমান। এ সময়ে তার নেতৃত্বে দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিশেষ করে ডিজিটাল আর্থিক সেবার বিকাশে এক ‘নীরব বিপ্লব’ ঘটে গেছে। দারিদ্র্য নিরসনকে কেন্দ্রে রেখে অর্থনীতি চর্চার জন্য তিনি ‘গরীবের অর্থনীতিবিদ’ হিসেবে পরিচিত এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বে থাকা কালে পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিংয়ের বিকাশে দেশে-বিদেশে অবদানের সুবাদে ‘সবুজ গভর্নর’ হিসেবে খ্যাত হয়েছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রখ্যাত জার্নালে অসংখ্য গবেষণা নিবন্ধ, পত্র-পত্রিকায় সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে সহজ ভাষায় কলাম লেখার পাশাপাশি গবেষণা-নির্ভর বই লিখেছেন শতাধিক।

ব্যাংকিং এবং অ্যাকাডেমিক জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ইতোমধ্যেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন ড. আতিউর। এর মধ্যে রয়েছে বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কার ও রবীন্দ্র একাডেমির রবীন্দ্র সম্মাননা, জাতীয় সাহিত্য পুরস্কার (বাংলা একাডেমি পুরস্কার) ২০১৫, শেলটেক পুরস্কার ২০১০, দ্যা বেস্ট সেন্ট্রাল ব্যাংক গভর্নর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক ২০১৫ (ফাইনান্সিয়াল টাইমস), দ্যা সেন্ট্রাল ব্যাংক গভর্নর অফ দ্যা ইয়ার ২০১৫ (ইউরোমানি), গুসি আন্তর্জাতিক শান্তি পদক ২০১৪, এবং ইন্দিরা গান্ধী স্বর্ণস্মারক ২০১১ (এশিয়াটিক সোসাইটি, কলকাতা)।

উল্লেখ্য, এর আগে বিভিন্ন বছরে এই সম্মাননা যারা পেয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন- ভ্যালরি এ. টেইলর (২০০৮), খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ (২০০৯), জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালেক (২০১০), অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী (২০১২), অধ্যাপক রেহমান সোবহান (২০১৬), জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান প্রমুখ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...