সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে যেসব দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার অতিমাত্রায় বেড়েছিল তার মধ্যে অনেক দেশেই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশে তেমন একটা কমছে না। এখানে খুব সামান্যই কমেছে। এর মধ্যে আগস্ট থেকে নভেম্বর এ ৪ মাস খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার টানা ডাবল ডিজিটে থাকার পর ডিসেম্বরে তা সামান্য কমে সিঙ্গেল ডিজিটে নামে।

তবে এটা এখনো ৯ শতাংশের উপরেই আছে। এদিকে বিশ্বব্যাপী নতুন করে চাল ও গমের দাম বাড়তে শুরু করেছে। বিশ্বের বড় ৬টি চাল ও গম রপ্তানিকারক দেশ এগুলো রপ্তানিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে।

সোমবার রাতে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বৈশ্বিক খাদ্য পরিস্থিতির আলোকে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশসহ এখনো ৭টি দেশ চাল ও গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। এর মধ্যে বিশ্বের বড় চাল ও গম রপ্তানিকারক দেশ রয়েছে ৬টি। এগুলো হচ্ছে ভারত, রাশিয়া, আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, বেলারুশ ও মিয়ানমার। বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় নিজেদের চাহিদা মেটাতে ২০২২ সালের প্রথম থেকে মাঝামাঝি সময়ে তারা এসব পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে চাল ও গমের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। দুটি পণ্যের দামই গত বছরের জুলাইয়ের পর থেকে কমছিল। নভেম্বর পর্যন্ত গড়ে প্রায় ৪ থেকে ৭ শতাংশ কমেছিল। এখন এগুলোর দাম গড়ে ২ থেকে ৩ শতাংশ বেড়েছে। পণ্য পরিবহণসংক্রান্ত জটিলতার কারণে খরচ বেড়েছে। ফলে পণ্যগুলোর দাম আবার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়, দেশটি এখনো চাল রপ্তানিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে। দেশটিতে পণ্যের দাম গড়ে ৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ছে। বৈশ্বিক মন্দা শুরুর পর থেকেই দেশে পণ্যের দাম বেড়েছে। যে ধারাবাহিকতা অব্যাহত। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার কমতে শুরু করেছে। গত বছরের আগস্টে এ হার বেড়ে সর্বোচ্চ সাড়ে ১২ শতাংশে ওঠেছিল। এরপর থেকে ওঠানামা করছে। তবে নভেম্বরে কমে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ ও ডিসেম্বরে আরও কমে ৯ দশমিক ৬ শতাংশে নেমেছে।

এদিকে আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভুটান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, চীন, ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এসব দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার কমে এসেছে। তবে ভারতে এ হার কমে এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে। এখনো আর্জেন্টিনাসহ বেশ কয়েকটি দেশে এ হার ডাবল ডিজিটের উপরে রয়েছে। তবে আর্জেন্টিনার চড়া মূল্যস্ফীতির সঙ্গে ওই দেশের মানুষ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ২৫১ শতাংশ। ব্রাজিলে এ হার ১ শতাংশের নিচে চলে এসেছে। খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আফগানিস্তান ও শ্রীলংকা বেশ সাফল্য দেখিয়েছে। এসব দেশে এখন খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে গড়ে ২ শতাংশের কম। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও খাদ্যপণ্যের দাম কমে এসেছে। এ খাতে মূল্যস্ফীতির হারও কমেছে।

এদিকে বিশ্বব্যাংকের অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডলার সংকটে আমদানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের ফলে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমে যাবে। একই সঙ্গে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে এ খাতে মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *