পুঁজিবাজারে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর কর আরোপ করা হবে না বলে জানিয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম।আজ সোমবার (২০ মে) বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি ।
তিনি বলেন, ক্যাপিটাল গেইনের ওপর করারোপ করার সিদ্ধান্ত একান্তই এনবিআরের, এখানে আমাদের বিশেষ কিছু করার নেই। তবে বিএসইসির প্রত্যাশা, শেয়ারবাজারের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর করারোপ না করা হোক। এতে পুঁজিবাজারের অগ্রগতি আরও তরান্বিত হবে।
তিনি জানান, বাজেট ঘোষণার আগে এ বিষয়ে বলার কিছু নেই। বাজেট ঘোষণা হলে আমরা বিষয়টি জানতে পারবো। তবে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর করারোপ চায় না বিএসইসি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বার্ষিক ৪০ লাখ টাকার বেশি ক্যাপিটাল গেইন হলে সে ক্ষেত্রে এ কর বসতে পারে। সম্প্রতি এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর করা এক বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরা হয়। তবে কত হারে কর বসানো হবে, তা জানা যায়নি। বর্তমানে শেয়ারবাজারের মূলধনি আয়ের ওপর কোনো কর নেই।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে করা এক সৌজন্য সাক্ষাতে বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কর্তৃপক্ষ প্রতিবছরই বাংলাদেশকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে একটি ক্যাপিটাল গেইনের উপরে ট্যাক্স আরোপ করা। কিন্তু এটি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা সম্ভব না। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তারা ক্যাপিটাল গেইনের উপর ট্যাক্স আরোপ করবে না।
এর আগে গত বছরও ক্যাপিটাল গেইনের ওপর করারোপ নিয়ে পুঁজিবাজারে নানান গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে সবশেষ বাজেটেও ক্যাপিটাল গেইন তথা তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা থেকে অর্জিত মুনাফার উপর কর অব্যাহতির সুবিধা বহাল রাখা হয়। যা এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা ভোগ করে আসছে। যদিও বে-মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড বা ইউনিট ফান্ডের লভ্যাংশে কর অব্যাহতি সুবিধা থাকলেও এর সীমা বেঁধে দিয়েছিলো এনবিআর।
গত বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। তারপর থেকেই তারা দেশের অর্থনৈতিক খাতে নানান পরামর্শ দিয়ে আসছে। তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে অর্থনীতি পর্যালোচনা করতে এসে আইএমএফের প্রতিনিধি দল শেয়ারবাজার, শিল্প এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে করছাড় বন্ধ করার পরামর্শ দেয়। এছাড়া পোশাক, পাদুকা, এলপিজি, মুঠোফোন, বিনোদন, খাবারের ওপর কম হারে ভ্যাট (সংকুচিত ভিত্তি মূল্যে) প্রত্যাহার করার সুপারিশও করেছে আইএমএফ। এমনকি প্রবাসী আয়ে কর বসানোর প্রস্তাব করেছে আইএমএফ।
তবে বাস্তবতার ভিত্তিতে করছাড় বন্ধের পদক্ষেপ নিতে চায় এনবিআর। সংস্থাটির পরিকল্পনা অনুসারে, প্রাথমিকভাবে ১৫-২০টি পণ্য এই তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে কর অবকাশ-সুবিধা পাওয়া এই তালিকা ছোট করা হবে।