সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

কৃষিতে ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ হয়েছে, আরও ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদনকে টেকসই করতে ও কৃষিখাতের রূপান্তরের জন্য জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮ বাস্তবায়ন চলছে। জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত এখাতে ৪৫ হাজার কোটি টাকারও (৪.৪ বিলিয়ন ডলার) বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। সরকারি বিনিয়োগ ৩০ হাজার ২০০ কোটি টাকা (৩.২ বিলিয়ন ডলার), বাকিটা উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার। এ ছাড়া সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক ও ইফাদ পার্টনার প্রকল্পে ৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তারপরও এই মুহূর্তে কৃষিখাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন।

মঙ্গলবার ইতালির রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বিশ্ব খাদ্য ফোরামের ‘বিনিয়োগ সম্মেলনের’ উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও পরবর্তী সেশনে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশের কৃষিখাতে বিনিয়োগ করতে উন্নত দেশ, আন্তর্জাতিক ব্যাংক, দাতা সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এ সময় আহ্বান জানান মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে এফএওর মহাপরিচালক কিউ দোংয়ু, চিফ ইকনমিস্ট টরেরো কুলেনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যাংক, দাতা সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোক্তা প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম, ইকনোমিক কাউন্সিলর মো. আল আমিন উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী কৃষিতে বিনিয়োগ উপস্থাপন বিষয়ক বাংলাদেশের নির্ধারিত সেশনে দেশের কৃষিখাতে বিনিয়োগ পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনা তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিকল্পনায় কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন, ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি ব্যবহার- এই ৬টি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এসব খাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন।

বাংলাদেশে বিনিয়োগের অবকাঠামো ও সরকারি সুযোগ-সুবিধার বিস্তারিত তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। বাংলাদেশে কৃষিতে বিনিয়োগের জন্য কৃষিখাত খুবই সম্ভাবনাময় এবং তা লাভজনক হবে।

বিশেষ করে আলু, পেঁয়াজ, আম, কাঁঠাল, আনারস ও টমেটো- এসব পণ্যের জন্য কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন, সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনে দ্রুত বিনিয়োগ কামনা করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, দেশে পেঁয়াজ, আম ও টমেটোসহ শাকসবজি সংরক্ষণের এখনো তেমন প্রযুক্তি নেই, কোল্ড স্টোরেজ নেই। এ ছাড়া এসব পণ্য সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে ২৫-৪০% নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য দ্রুত ২০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ১১০০টি মাল্টিপারফাজ কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন।

উল্লে­খ্য, কৃষিখাতের রূপান্তরে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কাজ করছে এফএও। সেজন্য এফএও ১৭-২০ অক্টোবর পর্যন্ত চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এ সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ৩২টি দেশ অংশগ্রহণ করছে, যাদের কৃষিখাতে বিদেশি বিনিয়োগের বেশি প্রয়োজন। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক, আরব ব্যাংক, আন্তঃআমেরিকান উন্নয়ন ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ল্যাটিন আমেরিকা উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যাংক, দাতা সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোক্তা প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *