কুমিল্লা এবার ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়েছে সরিষা। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাইশটি ইউনিয়নে প্রতিটি গ্রামে সরিষার অবাদ করছে স্থানীয় কৃষকরা। যদি অনুকূলে আবহাওয়ার থাকে তাহলে সরিষার ফলন গত বছরের চেয়ে বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। তারা সরিষা ঘরে তুললেই ধান চাষের জন্য জমি তৈরি করতে শুরু করবে এখন এসব এলাকায় চাষিরা সরিষার পরিচর্যা নিয়ে ব্যাপক সময় পার করছেন। জমি থেকে পাকা সরিষা সংগ্রহ করতে পারলেই কৃষকদের চিন্তা দূর হবে।
চলতি মৌসুমে পুরো উপজেলায় প্রায় ৯ হাজার ৫২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে সরিষার। কৃষকের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ হলেও বারি ১৪-১৫-১৭-১৮ বিনা ৪-৯-১১সহ কয়েক জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
উপজেলার রামচন্দ্রপুর উওর ইউনিয়নের বি-চাপিতলা কৃষক মফিজ মিয়া কামাল্লা ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের কৃষক হোসেন মিয়া যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামের কৃষক আদম আলী, শ্রীকাইল ইউনিয়নের পেন্নুই গ্রামের রফিক মিয়া, আন্দি কোট ইউনিয়নের দেওরা গ্রামের করিম মিয়া জানান, জমি তৈরির করা থেকে ফলন গড়ে তোলা পর্যন্ত প্রায় এক বিঘা প্রতি জমিতে সরিষা আমাদের খরচ হয়েছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে এসব জমি থেকে এক বিঘাপ্রতি প্রায় ৫ মণ থেকে ৬ মণ সরিষার ফলন পাবেন বলে আশা করছেন তারা। তবে এবার বাজার দর বেশি পাওয়ার আশা করেছেন অনেকেই। একাধিক কৃষক বাসসকে জানান, অন্যান্য ফসলের মত সরিষা আবাদে তেমন শ্রমের প্রয়োজন হয় না। জমি থেকে পাকা সরিষা সংগ্রহ ও মারাই করে ফসল ঘরে তোলার জন্য পরিবারের পুরুষের পাশাপাশি নারী বৃদ্ধ ও শিশু সদস্যরা নিয়মিতভাবে কাজ করেন।
মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, অল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে সরিষার ফলন ঘরে তোলা যায়। ঝড়-বৃষ্টি না হওয়ার চলতি মৌসুমে সরিষার ফলনও হয়েছে বেশ। সরিষার বর্তমান বাজারদর পায় মণ ২হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা তিনি আরো বলেন রোদে শুকিয়ে গুদামজাত করে পরে বিক্রি করতে পারলে সরিষার বাজার দর আরো বেশি পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। কিন্তু অভাবের তাড়নায় ফসল ঘরে তোলার পরই বিক্রি করে দিতে হয়।
মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাভেল খাঁন পাপ্পু বলেন, চলতি বছরে উপজেলায় প্রায় ৯ হাজার ৫২ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে পুরো উপজেলা। গত মৌসুমের তুলনায় এবার ৫% বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে বিঘা প্রতি পাঁচ হাজার আটশ’ বিশ টাকা খরচ করে প্রায় ৫ মণ করে সরিষার ফলন পাবেন চাষিরা। অল্প খরচে ভালো লাভবান হয়ে থাকবেন এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরিষা চাষিরা।