প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ দেশের অদম্য যুবসমাজ জাতির প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এ দেশের যুবদের বুকে অদম্য শক্তির যে বহ্নিশিখা প্রজ্জ্বলিত করে গেছেন, মানুষের জন্য কাজ করার যে প্রেরণা তিনি জুগিয়েছেন, সে প্রেরণা নিয়ে এ দেশের যুবসমাজ মাথা উঁচু করে সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) ‘জাতীয় যুব দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ‘জাতীয় যুব দিবস’ পালিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রশিক্ষিত যুব উন্নত দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’ এ উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশের তারুণ্যদীপ্ত যুবসমাজকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে জীবন বাজি রেখে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে সর্ব্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে লাল-সবুজের একটি নতুন দেশ সৃষ্টি করে এ দেশের যুবসমাজ। যুবদেরকে তিনি সংগঠিত করেছিলেন দেশপ্রেমের মহান দীক্ষায়। জাতির পিতা স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশ পুনর্গঠনেও যুবসমাজকে কাজে লাগান এবং শিক্ষিত ও কর্মদক্ষ যুবসমাজ সৃষ্টিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন ও রূপরেখা প্রণয়ন করেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীচক্র জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর বাংলাদেশের যুবসমাজকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার পথে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা চালায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যুবসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে উন্নীত করার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন কারিগরি, বৃত্তিমূলক এবং কৃষিভিত্তিক বহুমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার প্রশিক্ষিত যুবদেরকে জামানতবিহীন যুবঋণ দিয়ে তাদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে। যুবদের কর্মমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে প্রবাসেও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা ‘যুব কল্যাণ তহবিল আইন-২০১৬’ প্রণয়ন করেছি। এ তহবিলের আওতায় এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৬৬৮টি যুব সংগঠনকে ২৭ কোটি ৭৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা প্রকল্প ভিত্তিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনগুলোকে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে ‘যুব সংগঠন নিবন্ধন এবং পরিচালনা আইন-২০১৫’ ও ‘যুব সংগঠন বিধিমালা-২০১৭’, প্রণয়ন করা হয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, যুবসমাজের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ‘জাতীয় যুব কাউন্সিল বিধিমালা-২০২১’, ‘জাতীয় যুব নীতি-২০১৭’, ‘ইয়ুথ অ্যাকশন প্ল্যান’, ‘ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স’ ও ‘যুব উদ্যোক্তা নীতিমালা’ প্রণয়ন করা হয়েছে। যুবদের সামাজিক বৃদ্ধি, নেতৃত্ব সৃষ্টি, প্রতিভা বিকাশ, ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাভারে ‘শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় যুব কাউন্সিল গঠনের কাজ চলমান রয়েছে।