বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, ‘এলসি শর্তের কারণে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে এমন ধারণা ভিত্তিহীন ও ভুল। এলসিগুলোতে ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক শর্ত, সেগুলো সংবিধিবদ্ধ আদেশ বা বিজ্ঞপ্তি নয়। সুতরাং, এটিকে সামগ্রিকভাবে বাণিজ্যে প্রয়োগ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পরিমাপ হিসাবে ভুল ব্যাখ্যা করা উচিত নয়।’
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) এক বার্তায় এসব বলেন বিজিএমইএ সভাপতি।
বিজিএমইএ’র সদস্য, সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে পাঠানো এ বার্তায় বিজিএমইএ প্রধান বলেন, ‘বিজিএমইএ আমাদের কূটনৈতিক মিশন বা কোনো দাপ্তরিক উৎস থেকে কোনো অনুমোদন বা বাণিজ্যিক পদক্ষেপের মতো কোনো তথ্য পায়নি।’
সব ব্র্যান্ড, খুচরা বিক্রেতা এবং তাদের প্রতিনিধিদের বাহ্যিক বিষয় নিয়ে বাণিজ্যকে জটিল না করার জন্য, বিশেষ করে এ ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী অপ্রয়োজনীয় কোনো ধারা এলসিগুলোতে না ঢোকানোর জন্য আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা আমাদের সদস্যদের এ ধরনের কোনো এলসি গ্রহণ না করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং এলসিতে এ ধরনের কোনো ধারা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে সেটির ব্যাখ্যা ও সংশোধনের অনুরোধ জানাচ্ছি।’
শ্রমিকদের বৈধ অধিকার ও কল্যাণ রক্ষায় গৃহীত সব পদক্ষেপের অগ্রগতি এবং সাসটেইনেবিলিটি ভিশন ২০৩০ এর বিষয়টি উল্লেখ করে ফারুক হাসান বলেন, তারা যথাযথ পদক্ষেপ অনুসরণ করছেন এবং বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ভিত্তি নেই।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমরা আমাদের সরকারের সঙ্গেও কাজ করছি, যাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা বা উদ্বেগের সমাধান করা যায়, যা শিল্পের মধ্যে অব্যাহত অগ্রগতি এবং শ্রমিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে সমর্থন করে।’
ফারুক হাসান জানান, বহুল আলোচিত এলসিটি জেডএক্সওয়াই ইন্টারন্যাশনালের ‘কারিবান’ নামে এক ফরাসি ক্রেতার জারি করা মাস্টার এলসির বিপরীতে করা হয়েছিল। জেডএক্সওয়াই বিজিএমইএ’র সদস্য ‘নিট কনসার্ন’-এর অনুকূলে এলসি হস্তান্তর করে। বিজিএমইএ এলসির কপি সংগ্রহ করেছে। এই এলসিটি দুবাইয়ের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক জারি করেছিল।
এলসিতে যেসব বিষয় উল্লেখ আছে, ‘আমরা জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য কর্তৃক নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কোনো দেশ, অঞ্চল বা দলের সঙ্গে লেনদেন প্রক্রিয়া করব না। নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনো বিলম্ব, অকার্যকারিতা বা তথ্য প্রকাশের জন্য আমরা দায়বদ্ধ নই।’
বিজিএমইএ জেডএক্সওয়াইয়ের কাছে এ ধরনের ধারা বা শর্তের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। সংগঠনটির সভাপতি বলেন, ‘আমরা জেডএক্সওয়াইয়ের কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা পেয়েছি, পাশাপাশি মূল ক্রেতা কারিবানের কাছ থেকে একটি স্পষ্টকরণ বিবৃতি পেয়েছি, যা এটি স্পষ্ট করে তোলে।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে—কারিবান জেডএক্সওয়াই ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে তার মাস্টার এলসিতে এই ধারাটি সন্নিবেশ করা হয়নি। ধারাটি দুবাইয়ের স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক সন্নিবেশ করেছিল, যা তারা ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে প্রতিটি এলসিতে করছে। এই ধারায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে বলে উল্লেখ নেই। জেডএক্সওয়াই ইন্টারন্যাশনাল নিশ্চিত করেছে, তারা এলসির ধারাটি অপসারণ করবে এবং যদি প্রয়োজন হয় তবে তারা সেই ধারা ছাড়াই একটি নতুন এলসি জারি করবে।’